স্থায়ীভাবে বদলে যাচ্ছে মানবজাতির চোখ, সরু হচ্ছে অক্ষিগোলক

|

ছবি: সংগৃহীত।

বর্তমানে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ব্যবহার বহুলাংশে বেড়েছে মানবজীবনে। বিশেষ করে করোনা মহামারির পর থেকে এই অভ্যাস আরও বেড়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময়ই আমরা কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের সামনে থাকি। তাই এই অভ্যাসের সাথে মানিয়ে নেয়া শুরু করেছে আমাদের চোখও। তাই পাকাপাকিভাবে চোখের কার্যপদ্ধতি ও আকৃতিতে পরিবর্তন আসা শুরু হয়েছে।

ওয়েব এমডি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক গবেষণা এই তথ্য সামনে এনেছে। সেখানে বলা হয়েছে, মানুষের জীবনের অভ্যাস ও জীবনধারণের পদ্ধতির সাথে সাথে চোখের ব্যবহারেও পরিবর্তন এসেছে। মানুষ যতক্ষণ জেগে থাকে তার ৪৬ শতাংশ সময়ই কাটায় স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের সামনে। এর জন্য আমাদের চিরাচরিত গোলাকার অক্ষিগোলকের আকৃতি পাল্টে হয়ে যাচ্ছে জলপাইয়ের মতো বা ডিম্বাকৃতির।

এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, আমরা যখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করি, তখন ডিভাইসটি যথাসম্ভব চোখের কাছে ধরি। যাতে চোখের পুরো ফোকাসটি থাকে ফোনের পর্দার উপর। তার পেছনের সব কিছুকেই আমরা যত ঝাপসা দেখব, ততই স্পষ্ট হবে ফোনের ছবি।

দীর্ঘ দিন ধরে এটি চলতে থাকলে, চোখও চেষ্টা করে আলো যাওয়ার পথটিকে সরু করে দিতে। তাতেই বদলায় চোখের গড়ন। একে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হচ্ছে ‘শর্ট সাইটেড আই’। আর এর ফলে চোখের ভেতরের অংশটি আরও বাইরে বের হয়ে আসেছ।

এই প্রভাব বড়দের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর শিশুদের জন্য। কারণ বড়দের ক্ষেত্রে এখনই অভ্যাসে পরিবর্তন আনলে চোখের গঠন ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শিশুদের ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব না। ১৬-১৭ বছরের আগে একজন মানুষের চোখের আকৃতি পরিপূর্ণ হয় না। তাই শিশুদের কাছ থেকে ফোন দূরে রাখার চেষ্টা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে অভিভাবকদের।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোখের আকৃতি বদলের এই প্রবণতা বংশানুক্রমিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। ফলে গোটা মানবজাতির চোখের আকৃতি স্থায়ীভাবে বদলে যাচ্ছে বলে আভাস দিয়েছেন গবেষকরা। তবে এই সমস্যা সমাধানে দিনের মধ্যে কিছুক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ২০ মিনিট টানা কাজ করার পর ২০ সেকেন্ডের জন্য এমন কোনও কিছুর দিকে তাকাতে হবে, যা আপনার থেকে অন্তত ২০ ফুট দূরে রয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply