মোহরানার টাকায় অনাহারমুক্তির আশায় ২ নাবালিকা কন্যাকে বিয়ে দিলেন আফগান বাবা

|

প্রতীকী ছবি

অভাব-অনটনে অভুক্ত থাকছিল পরিবার। উপায়ন্তর না দেখে ‘অন্ধের যষ্টি’ দুই কন্যাকে কাজে লাগালেন বাবা। ১৩ আর ১৫ বছর বয়সী দুই কন্যার বিয়ে দিলেন বয়সে দ্বিগুণ দুই পুরুষের সাথে। উদ্দেশ্য? যাতে দুই কন্যার বিয়েতে মোহরানা হিসেবে পাওয়া আড়াই লাখ টাকায় দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটে পরিবারের বাকিদের!

তবে রয়টার্সে প্রতিবেদনে আফগান পিতা ও ইট ভাটা শ্রমিক ফজলকে উদ্ধৃত করে দেয়া হয়েছে আরও মর্মান্তিক একটি তথ্য। পরিবারের সবাইকে অনাহারের মৃত্যু থেকে বাঁচাতে হয়তো এই আড়াই লাখ টাকাও যথেষ্ট হবে না। তাই নিরুপায় হয়েই হয়তো নিজের ৭ বছর বয়সী মেয়েটিকেও তুলে দিতে হবে অন্যের হাতে!

আফগানিস্তানের এই দরিদ্র বাবা রয়টার্সকে বলেন, পরিবারকে খাওয়ানো ও ঋণ পরিশোধের জন্য এটা করা ছাড়া আমার উপায় ছিল না। তবে তৃতীয় কন্যাকে এভাবে বিয়ে দিতে হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আফগান নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আফগানিস্তানে বাল্যবিবাহও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর অর্থনীতির দেশ আফগানিস্তানে ১৫ আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের অর্থ সহায়তা-প্রদান। ফলে আরও বেশি ভেঙে পড়েছে আফগানিস্তানের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা।

নারী অধিকারকর্মীরা বলছেন, যৌতুক পাওয়ার বিনিময়ে দরিদ্র পিতারা তাদের কন্যা শিশুদের ভবিষ্যতে বিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করছেন। অধিকার কর্মীদের আশঙ্কা, আসন্ন মাসগুলোতে আফগানিস্তানে বাল্যবিবাহ দ্বিগুণ হবে।

আফগানিস্তানে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে জানিয়ে দেশটির খ্যাতনামা নারী অধিকার-কর্মী ওয়াজমা ফ্রগ বলেন, এই ঘটনাটি শুনে আমার অনুভূতি স্তব্ধ হয়ে গেছে। এটা বিবাহ নয়, এটা শিশু ধর্ষণ!

জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, আফগানিস্তানের পরিবারগুলো মোহরানা পাওয়ার বিনিময়ে তাদের ২০ বছরের কম বয়সী মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply