দেশে তৈরি বঙ্গভ্যাক্স ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের নীতিগত সিদ্ধান্ত

|

ছবি: সংগৃহীত

ক্লিনিকাল ট্রায়াল বা মানবদেহে পরীক্ষার জন্য অনুমোদন পেয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের উদ্ভাবিত করোনার টিকা বঙ্গভ্যাক্স।

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)-র পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিনের সই করা চিঠিতে এ কথা জানা যায়।

এর আগে বিএমআরসিতে গত ১ নভেম্বর বানরের দেহে চালানো পরীক্ষার ফলাফল সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় গ্লোব বায়োটেক। প্রতিবেদন জমার পর গত রবিবার বৈঠকে বসে বিএমআরসির ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিকস কমিটি। ওইদিনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকেই মূলত টিকাটি মানবদেহে পরীক্ষার অনুমোদন মেলে।

বলা হচ্ছে, বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি প্রাকৃতিক বিশুদ্ধ এমআরএনএ (মেসেঞ্জার রাইবোনিউক্লিক এসিড) দিয়ে তৈরি, তাই এটি সবচেয়ে বেশি নিরাপদ ও কার্যকর হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বঙ্গভ্যাক্স টিকাটি এক ডোজের। ইঁদুরের দেহে টিকাটি পরীক্ষা করে ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা পায় গ্লোব বায়োটেক। টিকাটি শতভাগ নিরাপদ বলেও প্রমাণিত হয়। পরে বিএমআরসির নির্দেশনা অনুসারে বানরের দেহে পরীক্ষা চালানো হয়। প্রাথমিক ফলাফলে টিকাটি বানরের দেহে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর এন্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে বানরের দেহে চ্যালেঞ্জ ট্রায়ালে দেখা যায় করোনার যতগুলো ভেরিয়েন্ট এসেছে তার সব কটিতেই টিকাটি শতভাগ কার্যকর।

এর আগে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি বঙ্গভ্যাক্সের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের নীতিগত পরীক্ষার জন্য বিএমআরসির কাছে প্রটোকল জমা দেয় গ্লোব বায়োটেক। বিএমআরসির চাহিদা অনুযায়ী সংশোধিত প্রটোকল জমা পড়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি। গত ২২ জুন বিএমআরসি মানবদেহে বঙ্গভ্যাক্সের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়, যদিও এর আগে বানর বা শিম্পাঞ্জির দেহে পরীক্ষা করার শর্ত দেয়া হয়। গত ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি বানরের দেহে পরীক্ষা শুরু করে, যা শেষ হয় ২১শে অক্টোবর।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার পর দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০২০ সালের ২ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) রোগের টিকা আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। এর প্রায় সাড়ে তিন মাসের মাথায় ১৫ অক্টোবর গ্লোব বায়োটেকের তিনটি টিকাকে (ডি সিক্স ওয়ান ফোর জি ভেরিয়েন্ট এমআরএনএ ভ্যাক্সিন, ডিএনএ প্লাজমিড ভ্যাক্সিনস এবং অ্যাডনোভাইরাস টাইপ-৫ ভেক্টর ভ্যাক্সিন) সম্ভাব্য টিকাপ্রার্থীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গ্লোব বায়োটেকই বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যাদের সর্বোচ্চ তিনটি ভ্যাক্সিনের নাম তালিকায় রয়েছে।

গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড ২০১৫ সালে ক্যানসার, আর্থ্রাইটিস, রক্তস্বল্পতা, উচ্চ রক্তচাপ, অটোইমিউন ডিজিজসহ অন্যান্য দুরারোগ্য রোগ নিরাময়ের জন্য বায়োলজিক্স, নভেল ড্রাগ এবং বায়োসিমিলার উৎপাদনের লক্ষ্যে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply