সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বিচার হয় না: রানা দাশগুপ্ত

|

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বিচার না হওয়ার ধারা এখনো অব্যাহত আছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি মনে করে, একাত্তরের মতো টার্গেট করে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের দেশ থেকে বের করে দেয়া যায়।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ এলাকার কৈবল্য ধামে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন রানা দাশগুপ্ত।

শ্রীশ্রী কৈবল্য ধাম বোর্ড অব ট্রাস্ট আজ শুক্রবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ধাম এলাকায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে হাজারো ভক্ত অংশ নেন।

কর্মসূচিতে রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। কিন্তু কোনো বিচার হয় না। আজও এই ধারা অব্যাহত আছে। এই দায়মুক্তির সংস্কৃতির কারণে সাম্প্রদায়িক শক্তি উৎসাহিত হচ্ছে। এই শক্তি মনে করে, ঠিক একাত্তরের মতো টার্গেট করে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে, তাদের ঘরবাড়ি দখল করে, মন্দির-মঠ-গির্জা ধ্বংস করে এবং নারী-মেয়েদের ধর্ষণ করে তাদের দেশ থেকে বের করে দেয়া যায়। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু হওয়া এই ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিন বেলা আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে সন্ত্রাসীরা নোয়াখালীর চৌমুহনীতে শ্রীশ্রী ঠাকুর রামচন্দ্র দেবের সমাধিক্ষেত্র মন্দিরসহ বিভিন্ন মন্দিরে হামলা চালায়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই মন্দিরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। মন্দির প্রতিষ্ঠার ৭২ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়েও চৌমুহনীতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। হামলায় মন্দিরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শ্রীশ্রী ঠাকুরের দুর্লভ চিত্রপট ও আশ্রমবাসীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের মনোবল ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, যা কোনো প্রকারের আর্থিক ক্ষতি দিয়ে পুরন করা যাবে না।

এদিকে, দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। একইসাথে এ ঘটনার প্রতিবাদে শ্যামাপূজায় দীপাবলীর উৎসব বর্জনের ডাক দিয়েছে তারা। সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানায় পূজা উদযাপন পরিষদ। নেতাদের অভিযোগ, হামলা ঠেকাতে সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হয়েছে।

অসাম্প্রদায়িক এই দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানান, সংগঠনটির নেতারা।

তারা বলেন, পূজা মণ্ডপে হামলা হতে পারে, এমন তথ্য দিলেও পুলিশ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ, বিচারবিভাগীয় তদন্ত-সহ বেশকিছু দাবি তুলে ধরেন তারা। একইসাথে এবারের শ্যামাপূজায় দীপাবলীর উৎসব বর্জনের ডাক দেয়া হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply