৪০ বছর পর বিলুপ্ত হতে পারে চকলেট

|

ছবি: সংগৃহীত।

আর বেশি দিন পাওয়া যাবে না চকলেট। মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে আর মেরেকেটে ১০ বছর। তারপর ‘সোনার চেয়েও দামি’ চকলেটের স্বাদ নিতে পারবেন মুষ্টিমেয় কয়েক জন। আর বছর ৪০ পরে পুরোপুরি হাওয়ায় মিশে যাবে এই চকলেট নামক সুস্বাদু খাবারটি। এমন আশঙ্কার কথাই বলছেন পরিবেশবিদরা।

ফোর্বস’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজ্ঞানীদের মতে এই চকলেট হারিয়ে যাবার পেছনের মূল কারণ জলবায়ু পরিবর্তন বা ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’। প্রত্যেক বছরই একটু করে গড় তাপমাত্রা বাড়ছে পৃথিবীর। এই গতিতে চললে, আগামী ১০ বছরেই চকলেটের উৎপাদন প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ইতোমধ্যেই কৃত্রিম উপায়ে চকলেট তৈরি নিয়ে গবেষণা চলছে। কিন্তু নকল চকলেটের স্বাদ আসলের ধারেকাছে পৌঁছনো আদৌ সম্ভব কিনা, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন কী ভাবে প্রভাব ফেলছে চকলেট উৎপাদনে?

পৃথিবীর বেশির ভাগ চকলেট উৎপাদন হয় আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের দুই দেশ, আইভোরি কোস্ট এবং ঘানায়। দুই দেশে সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকায় চাষ করা হয় কাকায়ো বা কোকোয়া গাছের। এই কোকোয়া গাছ এতটাই স্পর্শকাতর, তাপমাত্রার সামান্য এ দিক ও দিক হলেই মুষড়ে পড়ে তারা, বন্ধ হয়ে যায় ফল উৎপাদন। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, আগামী ৯-১০ বছরের মধ্যে এই এলাকার গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়ে যাবে। আর তাতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে এই গাছের ফলন।

তবে শুধু গরমই নয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাতে আইভোরি কোস্ট এবং ঘানার এই অঞ্চলগুলো পানির নিচেও চলে যেতে পারে। তা ছাড়াও আছে বিশেষ ধরনের ছত্রাকের আক্রমণ।

অনেকেই বলছেন, কোকোয়া গাছের প্রধান শত্রু যে ছত্রাক, জলবায়ু পরিবর্তনে তাদেরও বাড়বাড়ন্ত হবে। ফলে সব মিলিয়ে চকলেটের অস্তিত্ব পড়ে যাবে সঙ্কটে।

ইতোমধ্যেই চকলেট বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টাও হচ্ছে। ‘মার্স’ নামের চকোলেট বার কোম্পানি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ ভাবে কোকোয়া গাছকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করছে। চেষ্টা চলছে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে সেখানে কোকোয়ার চাষ করার।

তাই অনেকেরই আশঙ্কা, অচিরেই সব ধরনের উপহারের ঝুলি থেকে বাদ পড়বে সুস্বাদু এই খাবারটি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply