সৎমায়ের বিরুদ্ধে শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ

|

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সৎমায়ের বিরুদ্ধে পানিতে চুবিয়ে জান্নাতুল মাওয়া নামে চার বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের চেঙ্গামুড়া গ্রামের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে উদ্ধার হয় শিশু জান্নাতের লাশ। গতকাল বুধবার (২০ অক্টোবর) সকালে শিশুটির ময়নাতদন্ত জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় পুলিশ শিশুটির সৎমা রোহেনা বেগমকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চেঙ্গামুড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ তাজুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন বিগত দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেন। এসময় তার প্রথম স্ত্রী তানিয়া দেড় বছরের শিশুকন্যা জান্নাতকে দাদাদাদির কাছে রেখে বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ি সদর উপজেলার তিলিনগরে চলে যান।

এ দিকে মা-বাবার সংসার ভেঙে যাওয়ার পর থেকে হতদরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা দাদা ও দাদির কাছেই বড় হতে থাকে জান্নাত। এরই মধ্যে কবির হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে আরো একটি কন্যাশিশুর জন্ম হয়।

এরপর থেকে দাদাদাদি জান্নাতকে আদর করলে তার সৎ মা রোহেনার প্রচণ্ড ঈর্ষা শুরু করেন। ফলে অনেকসময় মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত শিশু জান্নাতের সাথে খারাপ আচরণ করতেন রোহেনা বেগম।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে জান্নাতের দাদা, দাদি বাড়ির বাইরে গেলে স্থানীয় লোকজন সৎ মাকে ১০ মাস বয়সী নিজের শিশুর পাশাপাশি সৎমেয়ে জান্নাতকে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে নামাতে দেখেন। কিন্তু পুকুর থেকে উঠে আসার সময় রোহেনা শুধু নিজের মেয়েকে নিয়ে উঠলে প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে তারা রোহেনাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন, জান্নাত পানিতে ডুবে গেছে।

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি করে জান্নাতের লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত শিশু জান্নাতের সৎমা রোহেনা বেগমকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নিহত শিশুর জান্নাতের দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ তাজুল ইসলামের অভিযোগ করেন, সৎমা রোহেনা জান্নাতকে গলা টিপে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে। আমরা তার ফাঁসি চাই। নাতনীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় দাদিও কেঁদে কেঁদে একই দাবি জানান।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আজাদ রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। মৃত শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে। শিশুটির সৎমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply