জম্মু কাশ্মির ছেড়ে পালাচ্ছেন শ্রমিকরা

|

একের পর এক হামলার মুখে জম্মু কাশ্মির ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন আতঙ্কিত শ্রমিকরা। চলতি মাসের শুরু থেকেই কাশ্মিরের সংখ্যালঘুদের ওপর শুরু হয় হামলা। এরপর হত্যাযজ্ঞের শিকার হন অন্য রাজ্য থেকে আসা কাশ্মিরের শ্রমিকরাও। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় চলতি মাসে প্রাণ গেছে ৩৩ জনের। সংশ্লিষ্ঠদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের গাফিলতির কারণেই এ ধরনের তাণ্ডবের সুযোগ পেয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।

জম্মু কাশ্মিরের বিমানবন্দর কিংবা প্রতিটি বাস টার্মিনাল, সবখানেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাণ্ডবের চিহ্ন। অন্য রাজ্যে থেকে আসা শ্রমিকরা যে যেভাবে পারছেন, প্রাণ বাঁচাতে ছুটছেন নিজ নিজ এলাকায়। অজ্ঞাত সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় একের পর এক বেসামরিকের মানুষ নিহতের ঘটনায় পুরো কাশ্মির এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের উপত্যাকায়।

লোকজন বলছেন, তারা বছরের পর বছর এখানে থাকলেও এখন জীবনের ঝুঁকি মনে হওয়ায় কাশ্মির ছাড়ার চেষ্টা করছেন। হঠাৎ কর্মস্থল পরিবর্তন করায় অনেকেই জীবিকার ঝুঁকির মুখে পড়লও এর বিকল্প কিছুই করার নেই বলে জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

চলতি মাসের শুরু থেকেই কাশ্মিরের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে চালানো হয় হামলা। শুরুতে অমুসলিমদের ওপর হামলা চালানো হলেও এরপর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের লক্ষ্যে পরিণত হন অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিক এবং মুসলিমরাও দুইদিনের ব্যবধানে গুলি করে হত্যা করা হয় ৫ শ্রমিককে। এখন পর্যন্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ৩৩ জনের।

২০১৯ সালে কাশ্মিরের বিশেষ রাজ্য মর্যাদা বাতিল করে বিজেপি সরকার। তারই প্রতিক্রিয়ায় বিচ্ছিন্নাবাদীরা বেসামরিকদের ওপর এ ধরনের হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এমনকি সরকারের গাফিলতির কারণেই হামলার সুযোগ পেয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা, এমন অভিযোগও করা হয়।

হিন্দুত্ববাদী নেতা সঞ্জয় টিকোর অভিযোগ, এখন যা হচ্ছে সবই ৫ আগস্টের পরিণাম। সরকার বহির্বিশ্বকে দেখানোর চেষ্টা করেছে যে, এখানকার পরিস্থিতি খুব স্বাভাবিক আছে। আর সেই ফাঁকে শক্তি অর্জন করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। আর এখন করা হচ্ছে হামলা।

কাশ্মিরের শিখ নেতা জগমোহন সিং রায়নাও বলছেন একই কথা। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু কোনো পক্ষের সাথেই আলোচনা না করে কাশ্মির ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেয়ায় তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর। সরকার যদি সংখ্যালঘু এবং সংখ্যাগুরু নেতাদের সাথে আলোচনা করতো তাহলে এই পরিস্থিতি হতো না।

এদিকে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমাতে চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান। এ পর্যন্ত সেনা অভিযানে ১৩ জঙ্গী নিহত হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply