কুমিল্লার মণ্ডপে কোরআন রাখা যুবককে শনাক্ত করেছে পুলিশ

|

সিসিটিভি ফুটেজে প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে হনুমানের গদা হাতে দেখা যাচ্ছে।

সহিংস পরিস্থিতি তৈরির লক্ষ্যে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখা যুবককে শনাক্তের কথা জানিয়েছে পুলিশ। তার নাম ইকবাল হোসেন। অভিযুক্ত ইকবালের বাড়ি কুমিল্লা নগরের সুজানগর এলাকায়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার ভিত্তিতে ইকবাল হোসেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

যমুনা নিউজের হাতে আসা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনার দিন এক ব্যক্তি গভীর রাতে সন্দেহজনকভাবে রাস্তা ধরে যাচ্ছেন। আবার ফিরে আসছেন ঘণ্টাখানেক পর। কিছু একটা হাতে নিয়ে ফিরে আসার সময়ও তিনি স্বাভাবিক ছিলেন না।

ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সিসি ক্যামেরার রেকর্ড অনুযায়ী ১৩ অক্টোবর গভীর রাতে (৩ টা ১২ মিনিট) একব্যক্তি রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছেন। তার হাতে কিছু একটা আছে। তার গতিবিধি সন্দেহজনক। ওই ব্যক্তি কিছু একটা হাতে নিয়ে কিছুদূর সামনে এসে আবার ঘুরে একটু পেছনে গিয়ে ডান পাশের রাস্তায় চলে যাচ্ছেন। ওই ব্যক্তির আসা-যাওয়ার কমবেশি এক ঘণ্টা সময়ে বদলেছে মণ্ডপের পরিস্থিতি। আগের অবস্থায় হনুমানের হাতে গদা ছিল। পরে সেখানে গদা নেই এবং পবিত্র কোরআন রাখা। যদিও মণ্ডপের ভেতরে ফুটেজ না থাকায় বুঝা যায়নি কাজটি কীভাবে হয়েছে। এর আগের ফুটেজে দেখা যায়, অনেকটা সন্দেহজনকভাবে বের হচ্ছেন ওই ব্যক্তি। রাত দুইটার পর তার বেরোনোর ভঙি খুবই সন্দেহজনক বলে ধরা যায়।

এই ব্যক্তিকেই ইকবাল বলে শনাক্ত করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে পাশের একটি মাজার থেকে পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়ে মণ্ডপে রাখেন ইকবাল। পরে সেটি পুলিশকে জানায় ইকরাম নামের আরেক অভিযুক্ত। আর পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর ফেসবুকে লাইভ করেন ফয়েজ নামের অপর আরেকজন ব্যক্তি। ইকবাল ছাড়া বাকিদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এর আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার বলেছিলেন, একজন ব্যক্তি বারবার অবস্থান বদলাচ্ছে। তাকে ধরতে পারলে, ঘটনার ক্লু বের হবে। সেই ব্যক্তিই ইকবাল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর দিন গত বুধবার ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদিঘির উত্তরপাড়ে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত অস্থায়ী পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন পেয়ে অবমাননার অভিযোগ তুলে হামলা করে ভাঙচুর চালায় একদল লোক।

এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা করতে যাওয়া একদল ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। যেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করে ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের সবাইকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমেই নেপথ্যে থাকা ‘মাস্টারমাইন্ড’দের শনাক্ত করা যাবে এমনটাই বিশ্বাস পুলিশের।

সিটিটিভি ফুটেজ দেখতে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply