তালেবানি কড়াকড়িতে যেমন আছে আফগান তরুণরা

|

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে দেশটির তরুণদের মাঝে। দেশটিতে প্রায় দুই দশক ধরে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতিতে পশ্চিমা ধাঁচের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল আফগান তরুণরা। তবে গেল তিন মাসে পরিবর্তন এসেছে সেই জীবনযাত্রায়। কড়াকড়ি আর নানা বাধ্যবাধকতায় ক্ষুব্ধ তরুণরা।

সদ্য কলেজ পেরুনো শিক্ষার্থী আহমাদ ফাহিম। নেই খেলাধুলার সুযোগ, বন্ধ সিনেমা হল। এমনকি টেলিভিশনেও নেই পছন্দের চ্যানেল। ফলে এখন ঘরবন্দি অস্থির সময় কাটছে তার। ফাহিম বলেন, জন্মের পর থেকে এই প্রথম তালেবানের শাসন দেখছি। নিজেকে সব সময় বন্দি মনে হয়। এত নিয়মনীতি আর কড়াকড়িতে দমবন্ধ হয়ে আসে।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই লক্ষ করা যায়, তরুণদের জীবনযাত্রা, এমনকি তাদের পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, চলাফেরা সবকিছু পাল্টে গেছে। ফাহিম জানালো আগে জিন্স টিশার্ট পরলেও এখন তালেবানের নিষেধাজ্ঞায় তিনি সেসব পুড়িয়ে ফেলেছেন।

শুধু পশ্চিমা ধাচের পোশাকই নয়, চুল দাড়ি কাটার ওপরও আছে কড়াকড়ি। অনেক স্থানেই দাড়ি কাটার ওপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় ছেলেমেয়ে একসাথে খাওয়া কিংবা ঘুরে বেড়ানোও। দেশটির তরুণদের ক্ষোভ, এসব কড়াকড়ি তাদের জন্য বোঝাস্বরূপ।

আফগান এক সেলুন মালিক বলেন, তরুণরাই ছিল তাদের মূল ক্রেতা। তারা আগে দাড়ি ছাটতো, নিয়মিত বিভিন্ন স্টাইলে চুল কাটতে আসতো। কিন্তু তালেবানের কড়াকড়ির কারণে এখন আর কেউ দাড়ির কাটতে আসে না, শুধু চুল কাটায়। ফলে আয় অনেকটাই কমে গেছে বলেও জানান তিনি।

প্রভাব পড়েছে কাপড় ব্যবসায়ীদের জীবিকায়ও। এক ব্যবসায়ী বললেন, সরকারের উচিত, মানুষ যেমনটায় খুশি হয় তেমনভাবেই সবাইকে চলতে দেয়া। এখন পরিস্থিতি যা চলছে সবাই নিজেকে বন্দি মনে করছে। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে তরুণদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় কোনো কড়াকড়ি রাখা উচিত না।

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের ২৮ মিলিয়ন নাগরিকই তরুণ, যা মোট জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply