‘শিশুদের ধর্ষণ ও হত্যা করাই ছিল নাঈমের টার্গেট’

|

মাদকসেবী আর চোর হিসেবেই পরিচিত নাইমুর রহমান নাঈম।

বরগুনায় শিশু ধর্ষণ চেষ্টায় এক যুবক গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসছে তার ভয়ঙ্কর অপরাধের তথ্য। এরইমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৫ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের আরও ঘটনা ঘটিয়েছে নাঈম। তার টার্গেট ছিল মূলত শিশুরা।

পুলিশ বলছে, যৌন লিপ্সা মেটানোর জন্য বিভিন্ন জেলায় একাধিক বিয়েও করে নাঈম। বিয়ের কিছুদিন পর সেই এলাকা থেকে পালিয়ে যেতো সে। এলাকাবাসীর কাছে মাদকসেবী আর চোর হিসেবেই পরিচিত নাইমুর রহমান নাঈম।

পুলিশ জানায়, গত শনিবার এক শিশুকে বরগুনার তুলাতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় নাঈম। শিশুটির চিৎকারে পালিয়ে যায় সে। সন্ধ্যার দিকে আবারও ঐ শিশুর বাড়ির কাছে গেলে, এলাকাবাসী তাকে ধরে পুলিশে দেয়।

বরগুনা সদর থানার ওসি এম তারিকুল ইসলাম বলেন, এক শিশুকে তুলাতুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় সে। তখন শিশুটি চিৎকার করলে ভয়ে পালিয়ে যায় নাঈম। পরবর্তীতে আবারও ওই শিশুর বাড়ির কাছে পেয়ে নাঈমকে ধরে ফেলে এলাকাবাসী, এসময় তাকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা।

নাঈমের গ্রেফতারের খবরে বরগুনায় ছুটে যান নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি জানান, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ধর্ষণের পর এক শিশুকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে নাঈমকে খুঁজছিলেন তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকারও করেছে নাঈম।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, পাঁচ বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে নাঈম। পরবর্তীতে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে ট্র্যাকিং করি। পাশাপাশি স্থানীয় সূত্র আমাদেরকে তথ্য দেয় যে নাঈম আবারও ধর্ষণ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, ধর্ষণের জন্য মূলত শিশুদের টার্গেট করতো নাঈম। এছাড়া যৌন লিপ্সা মেটানোর জন্য বিভিন্ন জেলায় বিয়ে করে, কিছুদিন পর সেখান থেকে পালিয়ে যেতো। তার পেশা চুরি।

শেখ বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, নিজের অসহায়ত্বের কথা বলে মানুষের কাছে জায়গা করে নিত সে। পরবর্তীতে সুযোগ পেলে চুরি করতো এবং কমবয়সী নারী দেখলে তাদেরকে ধর্ষণ করতো। যেখানে সে ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হতো সেখানে বিয়ে করার মাধ্যমে নিজের যৌন লিপ্সা মেটাতো।

নাঈমের বাড়ি বরগুনা সদরের লতাবাড়িয়া গ্রামে। স্থানীয়রা জানায়, অনেক আগে থেকেই মাদক সেবনসহ নানা অপকর্মে জড়িত সে।

পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিভিন্ন অপরাধের কথা জানার পর গত ৪ বছর ধরে নাঈমের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই তাদের। নারায়ণগঞ্জে শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় শিগগির নাঈমের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply