৪৫ বছর পর সাক্ষাৎ সিরাজুল আলম খান ও মাহবুব তালুকদারের

|

মহিউদ্দিন আহমেদের সাথে সিরাজুল আলম খান এবং মাহবুব তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদের সক্রিয়তায় ৪৫ বছর পর হলো বাংলাদেশের জন্ম ও বিকাশপর্বের দুই গুরুত্বপূর্ণ কুশীলব সিরাজুল আলম খান এবং মাহবুব তালুকদারের সাক্ষাৎ। মহিউদ্দিন আহমেদ তার ফেসবুক পেইজে স্ট্যাটাস আকারে জানিয়েছেন, ইতিহাসের ‘প্রতিনায়ক’ খ্যাত স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, দার্শনিক ও লেখক সিরাজুল আলম খানের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন তার এককালে রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত কবি ও শিশু সাহিত্যিক এবং বর্তমানে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাহবুব তালুকদার।

যমুনা টিভির পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

“আবার হলো দেখা।

১৯৬২ সাল। ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সেক্রেটারি শেখ ফজলুল হক মনি, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি সিরাজুল আলম খান, কালচারাল সেক্রেটারি মাহবুব তালুকদার। মাহবুব তালুকদার আবার ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার এবং ছাত্রলীগের একুশে সংকলনের সম্পাদক। তাঁর সঙ্গে দুজনের ‘তুই’ সম্পর্ক, শেখ মনি আর সিরাজুল আলম খান। ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাঁরা।

শেখ মনি আর নেই। মাহবুব আর সিরাজ পরস্পরের সঙ্গে দেখা করার ও কথা বলার আগ্রহ দেখালেন। আমি হলাম অনুঘটক।

কাল বিকেলে মাহবুব তালুকদার আমার বাসায় এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেলেন সিরাজুল আলম খানের কাছে। বন্ধুর জন্য বই আর ফল নিলেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ও কি মিষ্টি খায়? বললাম, সব খায়। ডায়াবেটিস নেই। পথে পড়ল বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার। বন্ধুর জন্য কিনলেন সন্দেশ।

সিরাজুল আলম খানকে সন্দেশ খাইয়ে দিচ্ছেন মাহবুব তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

সকালেই খবর দিয়েছিলাম, শেষ বিকেলে আমরা দুজন আসব। ঘরে ঢুকেই দুজন দুজনের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। ‘কীরে, কেমন আছিস’ বলে কথা শুরু। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর দেখা হলো দুজনার। তৈরি হলো এক আবেগঘন পরিবেশ। দুজন দুজনের মুখে সন্দেশ তুলে দিলেন। তারপর ঘণ্টাখানেক আড্ডা, কফি পান, স্মৃতিচারণ। ফেলে আসা দিনগুলোর কথা- তাঁদের বন্ধুদের আর কে কে বেঁচে আছেন, কোথায় আছেন। আমি একটা অসম্ভব সুন্দর সন্ধ্যার সাক্ষী হয়ে থাকলাম।

জানি না, তাঁদের দুজনের আবার দেখা হবে কি না। দুজনেই আশি পেরিয়েছেন। ভগ্ন স্বাস্থ্য। ছলছল চোখে পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নিলেন তাঁরা।”

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply