গুলি করো না, আমি চে গুয়েভারা

|

১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ার সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা যান চে।

কিউবা বিপ্লবের মহান স্থপতি চে গুয়েভারার মৃত্যু দিবস আজ। ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ার সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা যান চে। বলিভিয়ার সেনাবাহিনীর ভাষ্যমতে, তারা গুয়েভারাকে ৭ অক্টোবর গ্রেফতার করে এবং তার মৃত্যু হয় ৯ অক্টোবর।

বলিভিয়ার সেনাবাহিনী পরে ঘোষণা করে, বন্দি অবস্থায় নয়টি গুলি করে আর্জেন্টাইন ‘সন্ত্রাসবাদী’কে মেরে ফেলেছে এক মদ্যপ সৈনিক। এ সম্পর্কে নিউইয়র্ক টাইমস সে সময় লিখেছিল, একজন মানুষের সঙ্গে সঙ্গে একটি রূপকথাও চিরতরে বিশ্রামে চলে গেলো। পরে ১৯৯৭ সালে ভ্যালেগ্রান্দের একটি গণকবরে চে ও তার সহযোদ্ধাদের দেহাবশেষ আবিষ্কৃত হয়।

তরুণ বয়সে ডাক্তারি ছাত্র হিসেবে চে সমগ্র লাতিন আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন। সে সময় এসব অঞ্চলের সর্বব্যাপী দারিদ্র্য তাকে গভীরভাবে আহত করেছিল। এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি মানুষের দুঃখ ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছান। তিনি মনে করতেন, সমাজের অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণ হলো একচেটিয়া পুঁজিবাদ, নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ। আর এই অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের একমাত্র পথ হলো বিশ্ব বিপ্লব।

এই বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে চে রাষ্ট্রপতি জাকোবো আরবেনজ গুজমানের নেতৃত্বাধীন গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। পরে মেক্সিকো সিটিতে তার সঙ্গে রাউল ও ফিদেল কাস্ত্রোর আলাপ হয়। চে তাদের সাথে বিপ্লবে যোগ দেন। অনতিবিলম্বেই চে বিপ্লবী সংঘের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।

কিউবা বিপ্লবের পর চে নতুন সরকারে একাধিক ভূমিকা পালন করেছিলেন। চে একজন বিশিষ্ট লেখকও ছিলেন। গেরিলা যুদ্ধের উপর তিনি একটি প্রভাবশালী ম্যানুয়েল রচনা করেন। তরুণ বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকায় মোটরসাইকেলে ভ্রমণের স্মৃতিকথাটিও তার অত্যন্ত জনপ্রিয় রচনা। বৃহত্তর বিপ্লবে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি ১৯৬৫ সালে কিউবা ত্যাগ করেন। প্রথমে কঙ্গো-কিনসহাসায় তার বিপ্লব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তিনি বলিভিয়ায় বিপ্লবে অংশ নেন। সেখানেই সিআইএ-মদদপুষ্ট বলিভীয় সেনাদের হাতে বন্দি ও নিহত হন চে।

চে গুয়েভারার জীবনের শেষ কথা ছিল, গুলি করো না। আমি চে গুয়েভারা। মৃত চে গুয়েভারার চেয়ে জীবিত চে গুয়েভারা তোমাদের জন্য বেশি মূল্যবান।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply