কন্যা সন্তান হওয়ার আনন্দে ৫০ হাজার টাকার ফুচকা খাওয়ালেন ফুচকা বিক্রেতা

|

কন্যা সন্তানের বাবা হওয়ার আনন্দে সবাইকে এক দিন ফ্রি ফুচকা খয়ালেন ফুচকা বিক্রেতা।

উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত নন, নেই কোনো সার্টিফিকেট। কিন্তু এক জন উচ্চ শিক্ষিতকেও ছাপিয়ে যেতে পারেন নিজের উচ্চ চিন্তাধারা দিয়ে। ভারতের ভোপালের এই ফুচকা বিক্রেতার কাণ্ড দেখে তেমনই মনে হবে।

কন্যা সন্তানের জন্ম দিলে যেখানে আজও অনেক পরিবারে গঞ্জনা শুনতে হয় মাকে, অনেক ক্ষেত্রে স্বামীরাও নিজের কন্যা সন্তানকে মেনে নিতে না পেরে স্ত্রীকে দোষারোপ করেন, শিশুকন্যা হত্যার মতো ঘটনাও প্রায়ই ঘটে, সেই দেশে দাঁড়িয়েই নজির গড়ছেন ওই ফুচকা বিক্রেতা।

কন্যা সন্তানের জন্মের খুশিতে ভোপালবাসীকে বিনামূল্যে ফুচকা খাইয়েছেন তিনি! ফুচকা খাওয়াতে ৫০ হাজারেরও বেশি টাকা খরচ করে ফেলেছেন মেয়ে হওয়ার আনন্দে।

ওই ব্যক্তির নাম অঞ্চল গুপ্ত। ভোপালের কোলার এলাকায় ফুচকা বিক্রি করেন। মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন তিনি। যদিও পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে তার মানসিকতা যাচাই করা যায় না।

চলতি বছরের ১৭ অগস্ট তার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এটি অঞ্চলের দ্বিতীয় সন্তান। বছর দু’য়েক আগে তার স্ত্রী এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। সে বারেও কন্যা সন্তান আশা করেছিলেন অঞ্চল। দ্বিতীয় সন্তান কন্যা হওয়ায় যেন স্বপ্নপূরণ হয় তার।

বাঁধভাঙা খুশিতে প্রথম সন্তানের জন্মদিনের দিনই কন্যা সন্তানের জন্মের আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন অঞ্চল গুপ্ত। এজন্য আগে থেকেই তার দোকানে আসা সকল ক্রেতাকে বিনামূল্যে ফুচকা খাওয়ানোর দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

ওই বিশেষ দিন বিনামূল্যে ফুচকা খাওয়ানোর কথা ঘোষণা করে একটি বোর্ডও ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কথা মতো সম্প্রতি বিনামূল্যে ফুচকা খাইয়ে কন্যা সন্তানের জন্ম উদ্‌যাপন করলেন অঞ্চল। বিনামূল্যে ফুচকা খাওয়ার খবর ঝড়ের গতিতে সারা ভোপালে ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার দোকানের সামনে রীতিমতো ফুচকাপ্রেমীর লাইন পড়ে গিয়েছিল। রাস্তার পাশে যেখানে ফুচকার ঠেলাগাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি, তার পাশেই বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন অঞ্চল।

কয়েকটি টেবিল পেতে দিয়েছিলেন। প্রতি টেবিলে এক ঝুড়ি করে ফুচকা এবং তেঁতুল পানি ও অন্যান্য সামগ্রী রেখে দিয়েছিলেন। সকলকে পরিবেশন করা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই যাতে প্রয়োজন মতো ফুচকা টেবিল থেকেই নিয়ে খেতে পারেন অতিথিরা, সে দিকে বিশেষ নজর ছিল তার।

অঞ্চলের দুই ভাই ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রীও স্নাতক পাস। স্ত্রীকেও আত্মনির্ভর হতে শেখাচ্ছেন অঞ্চল। সেলাই মেশিন কিনে দিয়ে স্ত্রীকে স্বনির্ভর করে তুলতে চান তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply