কিডনি বেচে আইফোন কেনা যে কারণে বিপজ্জনক

|

কিডনি বিক্রি করে আইফোন কেনা ওয়াং সাংকুন এখন শয্যাশায়ী। ছবি: সংগৃহীত

অ্যাপল যখনই লেটেস্ট মডেলের আইফোন বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেয়, তখনই ইন্টারনেট দুনিয়া ভেসে যায় মিম ও কৌতুকে। যার মধ্যে কিডনি বিক্রি সংক্রান্ত কৌতুক থাকবেই। আইফোনের দাম এতোই বেশি যে তা কেনার জন্য সাধারণ মানুষের যেন কিডনি বিক্রি ভিন্ন উপায়ও নেই! তাই এই কৌতুকগুলো যে আরও বহুদিন চলবে তা বলাই বাহুল্য। তবে কৌতুকগুলোর পেছনে যেমন আছে বাস্তব ভিত্তি, তেমনি বাস্তব ভিত্তির ফলাফল হিসেবে আছে কিছু বিপদ। সত্যি সত্যি কিডনি বিক্রি করে আইফোনের মালিক হওয়া চীনের ওয়াং সাংকুন এখন শয্যাশায়ী।

কিডনি বিক্রি করে আইফোন কেনার মিম ও কৌতুকগুলোই যেন নিষ্ঠুর বাস্তব ২৫ বছর বয়সী ওয়াং সাংকুনের ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ মানুষ কেবল মুখেই যা বলে, তিনি তা করে দেখিয়েছেন। এবং নিজের বর্তমান দুর্দশা দিয়ে এটাও দেখাচ্ছেন যে, পরিকল্পনাটি আদতে তেমন সুবিধার কিছু নয়। মানুষের কিডনি থাকে দুটো। একটি বিক্রি করেও আরেকটি কিডনি নিয়ে দিব্যি ভালোভাবেই বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু এতে নেয়া হয়ে যায় অহেতুক ঝুঁকি, যা নেয়ার পর নিজেকে বিচক্ষণ প্রমাণ করাটাও হয়ে যায় দুরূহ।

২০১১ সালে ওয়াং সাংকুনের বয়স যখন ১৭, তিনিও ভেবেছিলেন দুটি কিডনি দিয়ে আর কী হবে! একটি দিয়ে তো বেঁচে থাকা যায়! যেই ভাবা সেই কাজ। অনলাইনে দেখলেন একটি বিজ্ঞাপন, যেখানে বলা হয়েছিল, কিডনি বিক্রি করে প্রায় তিন হাজার ডলার কামানো সম্ভব। তখন আনহুই প্রদেশে থাকতেন তিনি। কালোবাজারে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনাবেচার বিজ্ঞাপন দেখে কয়েক দিন পরই হুনান প্রদেশের এক হাসপাতালে তিনি করালেন অস্ত্রোপচার। অবৈধ উপায়ে এবং অভিভাবকদের না জানিয়ে অস্ত্রোপচারটি করান তিনি। শরীর থেকে বের করে নেয়া হয় তার ডান কিডনি।

প্রত্যাশামাফিক অর্থ পেলেন ওয়াং সাংকুন। ৩ হাজার ২৭৩ ডলার পেলেন তিনি। কিনলেন আইপ্যাড ২ এবং আইফোন ৪।

এক কিডনি নিয়েও বেঁচে থাকা যায়, কিন্তু বেগতিক দশা হলো ওয়াং সাংকুনের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন বলে কয়েক মাসের মধ্যে আক্রান্ত হয় তার অবশিষ্ট কিডনি। অবস্থার ক্রমাবনতির এক পর্যায়ে পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে যান তিনি। নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে তাকে।

আইফোন কেনার প্রসঙ্গ আসলেই কিডনি বিক্রির কৌতুকের পেছনে ওয়াং সাংকুনের ঘটনাই প্রকৃত প্রভাব রেখেছে কিনা তা জানা না গেলেও অনুমান করা যায়, এমন ঘটনা হয়তো বাস্তবেই আরও ঘটেছে।

আরও পড়ুন:

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply