রাঘববোয়ালদের পেটে যায় টাকা, কর্ণফুলী নদীতে মাঝিদের ধর্মঘট

|

বাড়তি মাশুল আদায়ের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মাঝিরা। বৈঠা বর্জন করায় ৩ দিন ধরে অচল বাংলাবাজার ঘাট। নদী পারাপার বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা। বাড়তি মাশুল আদায় বন্ধ করে নিয়মানুযায়ী ঘাট ইজারা দেয়ার দাবি করেছেন আন্দোলনরত মাঝিরা।

ঘাটের মাঝি ৫৭ বছর বয়সী আলী আহমদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কর্ণফুলী নদী তীরে। তিনি সাম্পান চালান ৪০ বছর ধরে। নিজেদের অধিকার আদায়ে রোববার থেকে অন্য ৩৫০ মাঝির মতো বৈঠা বর্জন করেছেন তিনিও। ফলে বন্ধ উপার্জন। তিনি বলেন, আমার কাছে চা খাওয়ার টাকা পর্যন্ত নাই। এখন দোকানে বাকি খেয়েই চলছি।

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদী তীরের ১৮টি ঘাটে যাত্রীপ্রতি ১০ টাকা ভাড়ার মধ্যে এক টাকা মাশুল আদায় করে ইজারাদার। কিন্তু বাংলাবাজার ঘাট কাউকে ইজারা দেয়নি সিটি কর্পোরেশন। অথচ, যাত্রীপ্রতি ৫ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় একটি চক্র। এ চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ইঞ্জিনচালিত বোট চলাচল ও যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দেন মাঝিরা। তারা বলেন, প্রশাসন আমাদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের জন্য জরিমানা করে কিন্তু চাঁদাবাজির বিষয়টা তারা দেখেনা। এসময় নৌকা বন্ধের কারণে তাদের দুর্দশার কথাও বর্ণনা করেন তারা।

সমিতির নেতারা অভিযোগ করেছেন, সিটি কর্পোরেশনকে একাধিকবার জানানোর পরও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বাংলাবাজার ঘাট সাম্পান মাঝি সমিতির সভাপতি মো. লোকমান ইজারা ছাড়া অবৈধ টাকা উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে এসব চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

নিয়মানুযায়ী সাম্পান মাঝিদের ঘাট ইজারা না দেয়ায় এ সংকট বলছেন নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন কর্মীরা। এভাবে চললে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের অংশ এই সাম্পান একসময় হারিয়ে যাবে বলেও শংকা তাদের। বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, চট্টগ্রামের সভাপতি আলীউর রহমান অভিযোগ করেন, সামঞ্জস্য না রেখেই নির্ধারণ করা হয় ঘাটের ইজারা।

কর্ণফুলী নদীর উভয়পাড়ে রয়েছে অনেক শিল্পকারখানা। যাদের শত শত কর্মী ছাড়াও কয়েকটি ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন এই নৌপথে। ধর্মঘটের কারণে বিপাকে তারা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply