তিমির বমির দাম কেন কোটি টাকা?

|

তিমির বমি বা অ্যাম্বারগ্রিস। ছবি: সংগৃহীত

বিগত কয়েক সপ্তাহে দুটি ঘটনায় মুম্বাই পুলিশ আটক করেছে ৫ জনকে, যারা অ্যাম্বারগ্রিস বা তিমি ম্যাচের বমি বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন। পাঠকদের জানানো যেতে পারে যে, তিমি ম্যাচের বমির মূল্য প্রতি কেজি প্রায় কোটি টাকার সমান।

সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরুতে প্রায় ৮ কেজি অ্যাম্বারগ্রিসসহ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। ভারতের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই অ্যাম্বারগ্রিস বা তিমির বমির মূল্য ছিল প্রায় প্রায় ৮০ কোটি রুপি।

প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, তিমির বমিতে এমন কী থাকে বা সেটা এমন কী কাজে লাগে যে তার মূল্য কোটি টাকা। ফ্লোটিং গোল্ড: আ ন্যাচারাল অ্যান্ড (আনন্যাচারাল) হিস্ট্রি অব অ্যাম্বারগ্রিস বইয়ের লেখক ক্রিস্টোফার কেম্প অবশ্য অ্যাম্বারগ্রিসকে তিমির বমি বলতে চান না। কারণ কোনো খাবার খাওয়ার পরপরই সে খাবার হজম না হলে সাথে সাথে মুখ দিয়ে কোনো কিছু বের হলে তাকে বমি বলা হয়।

কিন্তু স্পার্ম তিমির পাকস্থলিতে অ্যাম্বারগ্রিস তৈরি হতে অনেক সময় লেগে যায়। কখনো তা বছরের বেশিও হতে পারে। স্পার্ম তিমি খায় হাজার হাজার স্কুইড। কিছু ক্ষেত্রে সেই স্কুইড পাকস্থলি ও অন্ত্রের মাঝখানের জায়গায় গিয়ে জমা হয়। দীর্ঘদিন পর জমাকৃত সেই স্কুইডই অ্যাম্বারগ্রিসে পরিণত হয়। স্পার্ম তিমি পরে কখনো তা মুখ দিয়ে বের করে দেয়। প্রথম অবস্থায় অ্যাম্বারগ্রিস মোমের মতো পিচ্ছিল হয়।

তিমির মুখ থেকে বের হবার সময় অ্যাম্বারগ্রিসে কিছুটা বাজে গন্ধ থাকে। তবে তীরে আসার পথে ঢেউয়ের সাথে সংঘর্ষে এটি শক্ত হয় আর গন্ধটাও হয়ে যায় দারুণ। সুগন্ধি তৈরিতে তাই ব্যাপক চাহিদা এই অ্যাম্বারগ্রিসের। বিশ্বের বিভিন্ন দামি সুগন্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই অ্যাম্বারগ্রিস।

সুগন্ধি তৈরিতে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় আর সহজলভ্য না হওয়ার বাজারে অ্যাম্বারগ্রিসের এতো দাম বলে জানা গেছে ফ্লোটিং গোল্ড: আ ন্যাচারাল অ্যান্ড (আনন্যাচারাল) হিস্ট্রি অব অ্যাম্বারগ্রিস বইটিতে। এতো দামের কারণেই একে ফ্লোটিং গোল্ড বা ভাসমান সোনাও বলা হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply