মতের অমিল থাকায় যুবলীগ নেতাকে দিয়ে এসআইকে পেটালেন ওসি, তোলপাড় সুনামগঞ্জ

|

যুবলীগ নেতাকে দিয়ে এসআই কে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে সুনামগঞ্জের শাল্লা থানার ওসি'র বিরুদ্ধে।

মতের অমিল থাকায় যুবলীগের কথিত এক নেতাকে দিয়ে থানার এসআইকে পেটালেন ওসি। রাতের আঁধারে দলবল নিয়ে এসআইকে পেটানোর পর ওসিকে ফোন করে এসএইকে পেটানোর ব্যাপারটি নিশ্চিতও করা হয়েছে। এ সময় যুবলীগের ওই নেতাকে অভয়ও দিয়েছেন ওসি। এমন ফোনকলের অডিও ফাঁস হওয়ায় তোলপাড় সুনামগঞ্জ।

সুনামগঞ্জের শাল্লায় পুলিশের এসআই শাহ আলীকে পেটানোর ঘটনায় ওসি নুরে আলমের সাথে যুবলীগ নেতার ফোনকল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডে ঘটনার পর ওই এসআইকে প্রাণে মারার ইচ্ছা ছিল বলেও ওসিকে জানায় ওই নেতা। এসআইকে মারধরের ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা থেকে রক্ষা পেতে ওসির কাছেই আশ্রয় চেয়েছেন ওই যুবলীগ নেতা ও তার দলবল। প্রতি উত্তরে ওসি অভয় দেন তাদের। এছাড়াও আরো ৩টি অডিও রেকর্ড ফাসঁ হয়েছে। যেগুলোতে ঐ যুবলীগ নেতা কর্তৃক ওসিকে নিয়মিত বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা দেয়ার ব্যাপারেও জানা গেছে।

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জের শাল্লায় গত ১২ জুলাই দিবাগত রাতে যুবলীগ নেতা অপু বাহিনীর সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের এসআই শাহ আলী গুরুতর আহত হন। রাতের আঁধারে শাল্লা থানা সংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসআই শাহ আলী তার ওপর আক্রমণের বর্ণনা দিয়ে বলেন, গতকাল সোমবার (৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে থানা থেকে বের হয়ে বাসায় যাবার পথে যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপু ও তার বাহিনীর ৭-৮ জন লোক দা-লোহার রড-লোহার পাইপ নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শাহ আলী গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়ে চিৎকার করতে থাকলে, আশপাশের লোকজনসহ থানার অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা বের হয়ে আসে। এসময় সন্ত্রাসীরা চলে যায়। ওই সময় পুলিশ সদস্যরা আহত শাহ আলীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।

এ ঘটনার পরও সন্ত্রাসীরা হাতে অস্ত্র নিয়ে থানা সদরের বিভিন্ন পয়েন্টে মহড়া দিতে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে স্থানীয়রা পরিচয় শনাক্ত করায় কথিত যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপুসহ তার আরেক সঙ্গী রতন দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনায় পর ওসি নুরে আলম নিজেও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে সক্রিয়তা দেখান।

যুবলীগ নেতা অপু এর আগেও শাল্লা উপজেলার ইউএনও’র উপর হামলার ঘটনার এজাহারভুক্ত আসামি ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দলীয় প্রভাব ও সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে সে ক্রমশই বেপরোয়া হয়ে উঠে। ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডে যুবলীগ নেতা অপু শাল্লা থানার ওসিকে বলেন, ভাই দাদার সাথে কথা বলেন। তখন ঐ দাদা ওসিকে বলেন, স্যার যে জায়গায় বলছিলেন আপনার শাহ আলী দারোগাকে মনের ইচ্ছেমতো পিটাইছে, জানে শেষ কইরা দিতাম। দুইজন লোক আসায় বাইচ্চা গেছে। আমরার দিকে একটু খেয়াল করইন যে।

রেকর্ডের ভাষ্য অনুযায়ী ওসির নির্দেশেই এসআই শাহ আলীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন শাল্লা থানার ওসি নুরে আলম।

অন্যদিকে, ফোনকলের রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে যুবলীগ নেতা অপুর মোবাইল ফোন। এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে চাননি সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply