ঋণ না পেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাকে মারধর, কারাগারে ঠিকাদার

|

আটককৃত ব্যবসায়ী রাহাত চৌধুরী।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

ঋণ নবায়নের আবেদন মঞ্জুর না করায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার মামলায়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে রাহাত চৌধুরী নামের এক ঠিকাদারকে। আজ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) পটুয়াখালীর গলাচিপা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে তাকে পটুয়াখালী কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এমআর শওকত আনোয়ারুল ইসলাম।

এর আগে গতকাল সোমবার (২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে গলাচিপা উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক শাখার সিনিয়র
প্রিন্সিপাল অফিসার ও ব্যবস্থাপক মোঃ নাজমুল হাসানকে তার অফিসেই মারধর করে ঠিকাদার রাহাত চৌধুরী। ওই দিন বিকালে আপোষ মিমাংসার কথা বলে ব্যাংকে ডেকে এনে গলাচিপা থানা পুলিশ রাহাত চৌধুরীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবার পর রাতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোঃ নাজমুল হাসান।

মামলার বিবরণের বরাত দিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নাজমুল হাসান জানান, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মেসার্স চৌধুরী ট্রেডলিংক এর সত্ত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাহাত চৌধুরী ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের কক্ষে আসেন। এ সময় তার পূর্বের করা ৬০ লাখ টাকার লোন ও আরও ৪০ লাখ টাকাসহ মোট এক কোটি টাকার লোন বর্ধিত ও ঋণ মঞ্জুর না করায় ক্ষুব্ধ হন। ব্যবস্থাপক আরও জানান, রাহাত চৌধুরীর আগের ঋণসহ আরও যে পরিমাণ ঋণ বর্ধিত করতে চায় তা তার জামানতে ঋণের আওতা বর্হিভূত। এ কথা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে রাহত চৌধুরী শাখা ব্যবস্থাপক নাজমুলের কলার ধরে মারধর করে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।

এক পর্যায়ে টেবিলের উপরে রাখা পেপার ওয়েট দিয়ে টেবিলের গ্লাস ভাঙচুর ও কাগজপত্র নষ্ট করে ফেলে ব্যবসায়ী রাহাত। এসময় ব্যবস্থাপকের ডাক-চিৎকার শুনে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মচারীরা ব্যবস্থাপককে রক্ষা করে চিকিৎসার জন্য গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

পরে পুলিশকে খবর দিলে গলাচিপা থানা পুলিশ ব্যাংকে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এর আগেই অবস্থা বেগতিক দেখে রাহাত চৌধুরী সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা গলাচিপা থানার উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক
(এসআই) জাহিদুল ইসলাম কবির জানান, কৌশলে বিকাল ৩টার দিকে আপোষ মিমাংসার কথা বললে রাহাত চৌধুরী ওই ব্যাংকে আসলে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে রাতে মামলা দায়েরের পর তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তিনি জানান, রাহাত চৌধুরী এর আগেও ২০১৫ সালে গলাচিপা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো.
আলতাফ হোসেনকেও (বর্তমানে অবসরে) লাঞ্ছিত করেছিলেন। তার বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় ওই সময় ঘটনা আপোষ মিমাংসা হয়েছিল।

জানতে চাইলে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নাজমুল হাসান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন মামলা নং ২ তাারিখ ২ আগষ্ট ২০২১ইং। ওই মামলায়ে রাহাত চৌধুরীকে গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে গলাচিপা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পাঠালে বিজ্ঞ
আদালতের বিচারক শান্তনু কুমার মন্ডল তার জামিনের আবেদন বাতিল করে তাকে পটুয়াখালী জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply