আহত তারমিনা মারা গেছেন, ৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি কেউ

|

রমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন ছুরিকাঘাতে আহত মাদরাসা ছাত্রী তারমিনা।

মারা গেছেন ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত রংপুরের বদরগঞ্জের মাদরাসা ছাত্রী তারমিনা বেগম (১৪)। ঘটনার ৪ দিন পর আজ রোববার (১ আগস্ট) সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার। গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. হামিদুল ইসলাম জানান, গত ২৮ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তারমিনাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ১৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। এসময় ছুরিকাঘাতের কারণে তারমিনার বুক, দুই উরু ও পাজর থেকে রক্ত ঝরছিল। আমরা তাকে সুস্থ করার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড টিম গঠন করে চিকিৎসা দিয়েছি। কিন্তু তার বুক ও পেটের মাঝামাঝি স্থানে রক্তনালী কেটে যাওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, তারমিনা লোহানীপাড়া দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলাটি এখন হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে আমরা সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছি।

এদিকে আজ রোববার (১ আগস্ট) বিকেলে সাড়ে ৫ টায় লোহানীপাড়ার নিজ বাড়িতে ময়না তদন্ত শেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তারমিনার লাশ পৌছলে শত শত মানুষ তাকে দেখার জন্য ভিড় জমান। পরে তার নামাজে জানযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। সবাই এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সাখাওয়াতের ফাঁসির দাবি করেন।

তারমিনার পিতা তোয়াব আলী জানান, আমি ঘটনার দিনই মামলা দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করতে পারে নি। আমি আমার কন্যা হত্যার বিচার চাই। সাখাওয়াতের ফাঁসি চাই।

তারমিনার মা পারভীন আখতার জানান, মিঠাপুকুর উপজেলায় আমার বড় মেয়ে তহমিনার বাড়িতে বেড়াতে গেলে ওই এলাকার সাখাওয়াত হোসেন আমার ছোট মেয়ের তারমিনাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং বিভিন্নভাবে উত্তক্ত করতে থাকে। এ কারণে বিয়ের বয়স না হলেও গত ২৮ জুলাই তারমিনার জন্য আমরা বিয়ের দিন ধার্য করি।

তারমিনার মা জানান, বিয়ের দিন ভোরবেলা মোটরসাইকেলে এসে আমার বাড়ির প্রাচীর টপকিয়ে আমার ঘুমন্ত মেয়েকে ডেকে নেয়। এবং দরজার সামনেই ছুরি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। তারমিনা চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে পড়লে আমরা অন্য ঘর থেকে বের হয়ে এসে দেখি তারমিনা বুক, দুই উরু ও পাজরে ছুরির দাগ। রক্ত ঝরছিল পুরো শরীর বেয়ে। পরে তাকে গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পাঁচ দিন সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে মারা যায় আমার মেয়ে।

পারভীন আখতার বলেন, আমরা সেদিনই মামলা দিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনভাবেই আসামিকে ধরতে পারে নি। সাখাওয়াত আমার ফুলের মতো মেয়েকে হত্যা করেছে। আমিও তার ফাঁসিতে ঝোলানো লাশ দেখতে চাই।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply