রাজশাহীর গ্রামগুলোর অধিকাংশ রোগীই করোনার উপসর্গধারী

|

রাজশাহীর গ্রামগুলোতে অধিকাংশ রোগী করোনার উপর্সগধারী।

রাজশাহীর গ্রামগুলোতে অধিকাংশ মানুষ ভুগছেন জ্বর, কাশি ও ব্যথায়, যেগুলো করোনার উপসর্গ হিসেবেই বিবেচিত হয়। তাদের বেশিরভাগই যাচ্ছেন না হাসপাতালে। ভরসা করছেন স্থানীয় চিকিৎসকের উপরই।

তাদের ভাষ্য, বর্ষাকালে জ্বর, কাশি সবারই হয়, ঝুঁকির কিছু নেই। অবশ্য অবস্থা বেগতিক হলেই কেবল করছেন নমুনা পরীক্ষা, হচ্ছেন করোনা পজেটিভ। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটানোর প্রধান উপায় গণটিকা।

রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারের দাস মেডিকো নামের এক বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক স্বপন দাসের কাছে মধ্য দুপুরেও ভিড়। তার কাছে সেবা নিতে অপেক্ষায় অন্তত ২০ জন। এদেরই একজন ইসমাঈল হোসেন। তার দুই শিশু সন্তান ও স্ত্রী জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত।

গ্রাম্য চিকিৎসক স্বপন দাস বলছেন, মাসখানেক ধরে বেড়েছে করোনার উপর্সগধারী রোগী। তার হিসাবে গ্রামের অন্তত ৬০ ভাগ মানুষ উপসর্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যাদের অবস্থা তার কাছে বেশি খারাপ বলে মনে হচ্ছে তাদের তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন করোনা পরীক্ষার।

তবে, গ্রামের বাসিন্দারা এসব উপসর্গকে সাধারণ সর্দি-কাশি বলেই ভাবছেন। শুধু তফাৎ, আগে ৩-৪ দিনে সেরে উঠলেও এবার তা হচ্ছে না। তেমনই একজন পলাশবাড়ির এমাজ উদ্দিন। সেরে না ওঠায়, দুই সপ্তাহ পর নমুনা পরীক্ষা করিয়ে পুরো পরিবারসমেত হয়েছেন করোনা শনাক্ত। স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা, উপর্সগ থাকলেও প্রকাশ করছে না বেশিরভাগ মানুষ।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ৭০ ভাগই গ্রামের। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেরই এমন বিপর্যয় উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলছেন, ভীতি, সামাজিক ট্যাবু আর অসচেতনতা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, যাদের উপসর্গ আছে তারা কিন্তু বুঝতে পারে না যে তারা করোনা আক্রান্ত। যখন তাদের স্যাচুরেশন একেবারেই ৬০-৭০ এ নেমে আসে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় কেবল তখনই তারা হাসপাতালে আসার চেষ্টা করে।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, মানুষের মাঝে এক ধরণের ভয় আছে যে, করোনা পরীক্ষা হলে যদি পজেটিভ হই তাহলে আমার বাড়ি লকডাউন হবে। আমি ১৪ দিনের জন্য বের হতে পারবো না। আমার আত্মীয়-স্বজন কেউ আসতে পারবে না। এই যে ভয়-আশঙ্কা এটি গ্রামে এখনও আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণটিকা কার্যক্রম চালু হলেও সবাইকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা গেলেই কেবল সংক্রমণ কমানো সম্ভব।

/এস এন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply