ছেলেকে বাঁচাতে আইসিইউ ছেড়ে জীবন উৎসর্গ করলেন মা

|

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল।

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

শ্বাস নিতে পারছে না ছেলে। মুমূর্ষ অবস্থায় আইসিইউতে শুয়ে থাকা মায়ের কানে খবরটা যেতেই ছটফট শুরু করেন তিনি। নিজের হাতে লাইফ সাপোর্টের সরঞ্জাম খুলে ছেলেকে আইসিইউতে আনতে চিকিৎসকদের ইশারা করতে থাকেন। শত চেষ্টা করেও মাকে বোঝাতে পারেননি চিকিৎসকরা। বাধ্য হয়ে মাকে নামিয়ে আইসিইউ বেডে তোলা হয় ছেলেকে।

আইসিইউ থেকে নামার একঘণ্টার মাথায় পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে করোনার কাছে হার মানেন মা। মায়ের এমন আত্মত্যাগ আবেগতাড়িত করে উপস্থিত সবাইকে।

মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে। আইসিইউ ছাড়ার পর দুপুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মা প্রভা রাণী পাল। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ছেলে শিমু পাল।

জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তি হন মা ও ছেলে। মা প্রভা রাণী পালের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল। ছেলে শিমু পাল ভর্তি ছিলেন সাধারণ ওয়ার্ডে। তবে ধীরে ধীরে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে শিমুর। তাকেও আইসিইউ বেডে নেয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। তবে হাসপাতালটির ১৪টি আইসিইউ বেডেই রোগী থাকায় কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছিল না। একই অবস্থা ছিল চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও। কোথাও খালি ছিল না আইসিইউ শয্যা। পরে মায়ের আকুতিতে তাকে নামিয়ে আইসিইউতে তোলা হয় ছেলেকে।

মর্মান্তিক এ ঘটনার বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. আব্দুর রব জানান, পুরো ঘটনাটিই আমাদের চোখের সামনে ঘটেছে। কিন্তু আমরা নিরুপায়। রোগীর চাপ বাড়ায় হাসপাতালে কোনো আইসিইউ শয্যা খালি নেই।

সংশোধনী: প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মায়ের মৃত্যুর পর ছেলেকেও বাঁচানো যায়নি। সে সময় মা, ছেলের পরিচয় প্রকাশ করেনি তারা। তথ্য যাচাইবাছাইয়ের জন্য কয়েকদফা যমুনা নিউজের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হলে হাসপাতালটির করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. আব্দুর রব জানান, মা প্রভা রাণী পাল মারা গেলেও ছেলে শিমু পাল বেঁচে আছেন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। একই হাসপাতালে বাবা-ছেলের মৃত্যুর আরেকটি ঘটনা ঘটায় তথ্যবিভ্রাট ঘটেছে বলে জানান তিনি। এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুঃখপ্রকাশ করেছে। পাঠকের কাছে ভুল বার্তা যাওয়ায় যমুনা নিউজও দুঃখিত।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply