করোনা রোগীর চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে নিঃস্ব ভারতের বহু পরিবার

|

ভারতে করোনা রোগীর চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার। ছবি: সংগৃহীত।

ভারতে করোনা রোগীর চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার। সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যু হলেও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে ঋণের বোঝা। বলা হচ্ছে, একজন রোগীর আইসিইউ চিকিৎসায় যে অর্থ ব্যয় হয়, দিনমজুররা তার সমপরিমাণ অর্থ সারা বছরেও আয় করতে পারেন না। স্বাস্থ্যখাতে ভারতে সরকারি বরাদ্দ কম থাকায় এমন দুর্দশা বলে মন্তব্য করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।

ভারতীয় এক করোনা আক্রান্ত ছেলের বাবা অনিল শর্মা। করোনা আক্রান্ত সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন লাখ লাখ টাকা ঋণের বোঝা তার কাঁধে। ছেলের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় নিতে হয়েছিল আইসিউইতে। সেখানে দুই মাসের চিকিৎসায় ব্যয় হয় প্রায় ৩৩ লাখ রুপি। নিম্ন আয়ের এই ব্যক্তি বেশির ভাগ অর্থ জোগাড় করেছেন ধার দেনা করে।

অনিল শর্মা বলেন, আমার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থ ধার করতে হয়েছে। আমার বন্ধু এবং আত্বীয়দের কাছ থেকে ১৮ লাখ রুপি ধার করেছি। এছাড়া একটি সংগঠন চাঁদা তুলে দিয়েছে আরও ১৫ লাখ রুপি। প্রায় ৩৩ লাখ রুপি হাসপাতালকে দিতে হয়েছে। এখনও ধার করতে হচ্ছে, কারণ হাসপাতালের পুরো বিল এখনও পরিশোধ হয়নি।

এমন দুর্দশা ভারতের বহু মানুষের। বেশির ভাগ রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলেও আইসিউতে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। তবুও বিল পরিশোধ না করে নেয়া সম্ভব হয়নি প্রিয়জনের মরদেহ। ধার করে শোধ করা সেই ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে এখনও।

দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে আইসিউই চিকিৎসায় যে ব্যয় তা বহন করা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রায় অসম্ভব। মূলত, বছরের পর বছর স্বাস্থ্য খাতে সরকারের অবহেলার কারণেই এমন দুর্দশা বলে মনে করেন তারা।

ভারতের জনস্বাস্থ্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাক্তিভেল সেলভরাজ বলেন, প্রায় ৯০ ভাগ দিনমজুরের সারা বছরের উপার্জনের টাকা দিয়েও আইসিউতে একজন রোগীর খরচ বহন করা সম্ভব না। এমনকি সাধারণ কর্মীদের ৬ মাসের বেতন চলে যাবে আইসিউ খরচে। এর মূল কারণ, গেলো ৭০-৭৫ বছর ধরে জনস্বাস্থ্যকে কখনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ভারতে। এই খাতে উন্নতির জন্য আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় এমনিতেই আর্থিক সংকটে আছে লাখ লাখ ভারতীয়। এর মধ্যে এই ধরনের উচ্চ চিকিৎসা ব্যয় দেশটির মানুষের আর্থিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

/এস এন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply