লকডাউনের কারণে পিছিয়ে গেল সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

|

লকডাউনের কারণে সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি আজ।

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন আজ পূর্ব নির্ধারিত থাকলেও তা শুরু হয়নি। মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাই চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি আজ।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, গত ২৭ জুন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আসামিদের উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করে যথাক্রমে ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই একটানা তিন দিন বাদীসহ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাক্ষ্য্য গ্রহণ করা হচ্ছে না। পরবর্তী দিন ধার্য করে এটি সম্পন্ন করা হবে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার সন্তোষ বড়ুয়া জানান লকডাউনের পরে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে জেলা ও দায়রা জজ নতুন করে এই মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ দেবেন। ঐ তারিখে বাদীসহ স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করবেন আদালত।

আদালতে দেয়া চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসর প্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন মামলা নম্বর : এসটি-৪৯৩/২০২১, (জিআর মামলা নম্বর: ৭০৩/২০২০) ও টেকনাফ মডেল থানা মামলা নম্বর: ৯/২০২০।

বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় ও মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব-১৫।

হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র‍্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক থাকা ১৫ আসামি হলেন- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ। পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply