মৌসুমের প্রথম দিন থেকেই মিলছে ইলিশ, খুশি উপকূলের জেলেরা

|

আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি জেলেরা।

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য নদীতে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে নেমে প্রথম দিন থেকেই মেঘনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাচ্ছে জেলেরা। এতোদিন পর কর্মে ফিরে আশানুরূপ মাছ পেয়ে খুশি উপকূলের জেলেরা।

শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া ও কোম্পানীগঞ্জের উপকূলের হাটগুলো ইলিশ মাছে সয়লাব ছিল। দামও ছিল হাতের নাগালে।

এর আগে ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য গত ২০ মে থেকে শুক্রবার (২৩ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদীতে আবারো মাছ ধরা শুরু করেছে।

জেলেরা জানায়, শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে নদী উত্তাল ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিগনাল থাকায় তারা বেশিদূর যেতে পারেননি। তবুও শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল পর্যন্ত জালে প্রচুর পরিমাণে রূপালী ইলিশ ধরা পড়েছে। তবে এবার মাছ আকার তুলনামূলকভাবে ছোট। তারপরও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি তারা।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর নদীতে মাছ শিকারে নামতে পারায় উপজেলার জেলে পল্লীগুলোতে আনন্দের জোয়ার বইছে, হাসি ফুটেছে জেলে পরিবারেগুলোতে।

হাতিয়ার বুড়ির চর ইউনিয়ন জেলে সমিতির সভাপতি জবিউল হক বলেন, দীর্ঘদিন পরে জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে পারায় তাদের মধ্যে প্রচুর আনন্দ বিরাজ করছে। জেলে পরিবারেও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ঘাটেও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

কোম্পানীগঞ্জের জেলে মনতোষ দাস জানান, মুছাপুর ক্লোজার ঘাট ও চরএলাহীর চরলেংটা ঘাটে প্রচুর ইলিশ মাছ এসেছে। চাপরাশিরহাট, পেশকারহাট, বামনী বাজার, বাংলাবাজার, বসুরহাটসহ সকল বাজারে মাইকিং করে ইলিশ মাছ বিক্রি করা হয়েছে।

এদিকে বসুরহাটে তিনশ, পাঁচশ ও সাতশ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে লকডাউনের কারণে ক্রেতা কম থাকায় বাজারের আশপাশে বেশ কয়েকটি স্থানে মাইকিং করতে শোনা গেছে।

হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র দাস বলেন, নোয়াখালীর উপকূলে কোনো সতর্ক সংকেত নেই। তবে বৈরী আবহাওয়ায় গভীর সমুদ্রে না গিয়ে কাছাকাছি স্থানে মাছ ধরতে বলা হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মোতালেব হোসেন বলেন, ইলিশ মাছ বড় হতে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা ছিল। এছাড়াও গভীর সমুদ্রে যেসব মাছ উৎপাদন হয় তার প্রজননের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা কাজে এসেছে বলে মনে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার প্রধান উদ্দেশ্য ইলিশসহ গভীর সমুদ্রের মাছকে নিরাপদে মা মাছে রূপান্তর করা, যাতে করে তারা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। আমরা ধারণা করছি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply