ডেনিয়েল ওর্তেগাকে চাপ দিতে আইন পাশ হচ্ছে মার্কিন কংগ্রেসে

|

নিকারাগুয়ার ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি ডেনিয়েল ওর্তেগা’র ওপর চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে আইন পাস করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) একটি বিল আনা হয় মার্কিন কংগ্রেসে। কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মারিয়া এলভিরা সালাজার বিলটি উত্থাপন করেন।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম মায়ামি হেরাল্ডের বরাতে বলা হয়েছে, নিকারাগুয়ার ক্ষমতাসীন সরকার দেশটির বিরোধী দলীয় নেতাদের ওপর যে প্রতিহিংসামূলক দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, মূলত তা বন্ধে এই আইন করা হচ্ছে।

মার্কিন কংগ্রেসে আইন প্রণেতা হওয়ার আগে নিকারাগুয়ায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন মারিয়া অ্যালভিরা সালাজার। সেখানে প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন তিনি। এক বিবৃতিতে মারিয়া বলেছেন, ড্যানিয়েল ওর্তেগার শাসনামলে নিকারাগুয়া নিপীড়ক শাসকের দেশে পরিণত হয়েছে। নিকারাগুয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি রয়েছে, তার পর্যালোচনার জন্য প্রস্তাবটি এনেছেন মারিয়া। মার্কিন কংগ্রেসে আনা এই বিলে সমর্থন দিচ্ছেন রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক দুই দলের আইন প্রণেতারাই।

বিবিসি জানিয়েছে, বিরোধী দলীয় নেতাদের দমনের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করে নিকারাগুয়ার পুলিশ। এর মধ্যে ড্যানিয়েল ওর্তেগা’র সাবেক জোটসঙ্গীরাও রয়েছেন। দেশটির পুলিশ বাহিনী বলছে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপকে উস্কে দেয়া সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আছে গ্রেপ্তারকৃত নেতাদের বিরুদ্ধে।

আগামী নভেম্বরে নিকারাগুয়ায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াই করতে পারেন, এমন চারজনসহ ১২ জন সিনিয়র নেতাকে গত সপ্তাহের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

৭০ এর দশকের শেষে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট একনায়ক সোমোজা সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা। পরবর্তী এক দশক ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। তবে ১৯৯০ এর নির্বাচনে তিনি হেরে যান তিনি। এরপর ২য় দফা ক্ষমতায় ফিরতে তার সময় লাগে ১৬ বছর। ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে ওর্তেগা আবার ক্ষমতায় ফেরেন।

দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ওর্তেগা তার রাজনৈতিক অবস্থান বদলেছেন বহুবার। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে সমঝোতা করেন দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় রক্ষণশীল গোষ্ঠীর সাথে। একসময়ের বামপন্থী ওর্তেগা রূপান্তরিত হয়েছেন ধার্মিক ক্যাথলিক খ্রিষ্টানে। নানা প্রক্রিয়ায় পুরোনো শত্রুদের কাছে টেনে নিয়েছেন, প্রয়োজনে দূরে ঠেলেছেন পুরোনো মিত্রের অনেককেই। এ ছাড়া ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে সংবিধান সংশোধন করার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

নিকারাগুয়ায় দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকা যাবে না, এমন ধারা সংবিধান থেকে বিদায় করেছেন ওর্তেগা। সর্বশেষ ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছিলেন তিনি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ওই বিক্ষোভ দমনে পুলিশ নির্বিচারে দমন–পীড়ন চালায় বলে অভিযোগ আছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply