‘শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা হলে খুলে দেয়া হবে হল’

|

পরীক্ষা এবং হল খোলার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মুহম্মদ সামাদ বলেন, অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞান অনেক শিক্ষকেরই নেই। তাই শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা নেয়ার কোনো বিকল্পও নেই। আর শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই হল খুলে দেয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হল খোলা নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। আবার সেসব আন্দোলনে হামলা করছে অন্য ছাত্র সংগঠন। এমন অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানালেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হল খোলা নিয়ে তারা কী ভাবছেন।

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর অবিলম্বে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে ই-লার্নিং পদ্ধতি এতোটা জনপ্রিয় ও সহজলভ্য নয়। তাই অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকির সম্মুখীন। তাছাড়াও তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে বলেও নুর দাবী করেন। তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনাকে অবহেলার সুযোগ নেই। উঠতি বয়সের শিক্ষার্থীরা এমন অচলাবস্থার কারনে নানা আসক্তিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাই মিশ্র পদ্ধতি যেমন কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ক্লাসরুমে এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করতে পারে। এভাবে শিফটিং ও রোস্টার পদ্ধতিতে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে বলে মত দেন নুর। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের বাঁধা প্রদানের তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ ফয়েজুল্লাহ বলেন, তারা সরাসরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবী জানাচ্ছেন না বরং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য একটি কার্যকর রোডম্যাপের চাহিদা অনুধাবন করে সেই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকাকে প্রশ্ন করছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারে প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। দেশে যখন ভ্যাকসিন আসলো তখনই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদেরকে তার আওতায় আনা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না হলে আন্দোলনে যাবে ছাত্রদল, গত ২৯ মে রাজু ভাস্কর্য থেকে এমন ঘোষণা আসে। সেই প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, উপাচার্য বরাবর যে রোডম্যাপটা তারা পেশ করেছেন সেটা অনুসরণ করেই বিশ্ববিদ্যালয় খোলা সম্ভব। পরীক্ষা গ্রহণের আগে অবশ্যই হল খুলতে হবে বলেও জোর দেন তিনি। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রতি ছাত্রলীগের হামলার নিন্দাও জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খোলার দাবীর প্রসঙ্গে বলেন, সকল সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে সেশন জটে না পড়ে এবং বয়সজনিত জটিলতার কারণে তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে একমাত্র ছাত্রলীগই দৃষ্টি রেখেছে।

ড. সামাদ করোনাকালীন অবস্থাকে দুঃসহ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় শিক্ষার্থীরা সেশন জটে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না। কিন্তু করোনা মহামারী একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এখন খোলামেলাভাবে চলাফেরা করা নিরাপদ নয়। তাই দ্রুত টীকার ব্যবস্থা করা উচিত এবং শিক্ষার্থীদের এই টীকার আওতায় নিয়ে আসার পরই শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করাটা নিরাপদ। সবার সুরক্ষার কথা ভেবেই যাবতীয় কর্মপন্থা ঠিক করা হচ্ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply