ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে সরগরম হল মিউনিখ সম্মেলন

|

৫৩ তম মিউনিখ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলন

গত রোববার ছিল মিউনিখ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনের ৫৩তম আসরের শেষদিন। মিউনিখের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে শেষ দিনে আলোচনায় মূল বিষয় ছিলো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলা সংঘাত এবং অস্থিতিশীলতা। তবে, সবকিছুকে ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে আসে ইরান-ইসরায়েল ইস্যু।

এই ইস্যুতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর হুঁশিয়ারিতে উত্তেজনার পারদ চড়ে যায় সম্মেলনের শেষদিনে। ‘ইরান অস্থিতিশীল করে তুলছে পুরো অঞ্চলকে’ এমন অভিযোগ করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তেহরান পাল্টা জবাব দেয় নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্য ভাঁড়ামো আর হাস্যরস ছাড়া কিছুই নয়। এসময় ইরাক-সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করার জন্যও তেল আবিবকে দায়ি করে তেহরান।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার জন্য এককভাবে ইরানকেই দায়ী করে বলেন, “এই যে দেখুন কিভাবে মধ্যপ্রাচ্য নিজের প্রভাব বিস্তার করছে ইরান এবং আইএস। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে ইরান বিস্তৃত করছে নিজেদের ক্ষমতার কালো হাত। কিন্তু আমরা তেহরানকে আর বাড়তে দেবো না। মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রুখবোই।”

ইরানবিরোধী সুর ছিলো সৌদি প্রতিনিধির মুখেও। দেশটির সাথে ছয় বিশ্ব শক্তির হওয়া পরমাণু চুক্তির সমালোচনা করে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন এর ফলে অস্ত্র নির্মানের সুযোগ পাবে ইরান।

নেতানিয়াহুর অভিযোগের উত্তরে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, “নেতানিয়াহু একটা হাস্যকর চরিত্র, তাই তার কথার জবাব দেয়ার কোনো মানেই হয় না। কারণ আমরা এখানে এসেছি জরুরি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে, কোনো ভাঁড়ের তামাশা দেখতে নয়। ইসরায়েল প্রতিদিন দখলদারিত্ব চালাচ্ছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে, ষড়যন্ত্র করছে লেবানন নিয়ে, আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে সিরিয়ার। অথচ মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার জন্য দোষ চাপাচ্ছে আমাদের ওপর।”

সংকট সমাধানে সব পক্ষকে আলোচনার বসার আহ্বান ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের কন্ঠে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন,”আমরা চাই স্থিতিশীল এবং শান্তিপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্য। তাই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি আমাদের আহ্বান, সংঘাতপূর্ণ বক্তব্য এবং সিদ্ধান্তের বদলে আপনারা শান্তিপূর্ণ আলোচনায় বসুন। বিশেষ করে ইরান এবং রাশিয়া।”

বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ৪৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৩০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব এবং ৯০ জন সংসদ সদস্যসহ প্রায় ৫০০ নীতিনির্ধারক অংশ নেন এই নিরাপত্তা সম্মেলনে। ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখে শুরু হয় তিনদিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply