জনবল সংকটে বিকল প্রায় ভৈরবের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর

|

ভৈরব প্রতিনিধি:

মাদকের ট্রানজিট শহর ভৈরব। প্রতিদিন সড়ক, নৌ ও রেলপথে লাখ লাখ টাকার মাদক ভৈরব দিয়ে পাচার হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে। অথচ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কিশোরগঞ্জ খ-অঞ্চল অফিস ভৈরবে অবস্থিত। অফিসটি নামেই আছে কোনো কাজে নেই। অফিসে জনবল মাত্র ৫ জন। তার মধ্য একজন পরিদর্শক, একজন এস আই, একজন এ এস আই ও দুইজন কনস্টেবল। কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব অফিসের আওতায় ভৈরব, কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, কটিয়াদি, অষ্টগ্রাম ও নিকলি। অফিসের নেই কোনো অস্ত্র, নেই কোনো গাড়ী। রিকশা আর সিএনজি দিয়ে কর্মকর্তাদের চালাতে হয় অভিযান। এ কারণে তাদের কাজের কোনো গতি নেই।

এসব অভাব ও সংকটের কথা জানালেন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক সেন্টু রঞ্জন নাথ। তিনি বলেন, জনবলের অভাবে আমরা মাদকদ্রব্যের কাজগুলি ঠিকমত করতে পারি না। মাসের প্রায়দিন কিশোরগঞ্জ আদালতে সাক্ষী দিতে উপস্থিত হতে হয়। অভিযানে গেলে পরিবহনের অভাবে সময়মত পৌঁছাতে পারি না। এ কারণে অপরাধী মাদক ব্যবসায়ীরা অভিযানের টের পেয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অফিসে কোনো অস্ত্র নেই। এ কারণে অভিযানের সময় নিরাপত্তার অভাববোধ করি। মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটগুলি অনেক শক্তিশালী। তাদেরকে অস্ত্র ছাড়া গ্রেফতার করা খুব সহজ কাজ নয়। এছাড়া অফিসে নেই ভাল কোনো আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি।

সেন্টু রঞ্জন নাথ বলেন, গত বছর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর একটি বিশেষ অভিযান চালিয়েছিল ভৈরবে। এতে মাদক ব্যবসায়ী চক্র ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ভৈরব অফিসটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। অফিসের আসবাবপত্র, ফাইলসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এখন অফিসটি অন্যত্র স্থানান্তর করা হলেও নতুন আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দেয়া হয়নি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভৈরব থানায় প্রতিমাসে ৬০/৭০ টি মাদকের মামলা হয়। পুলিশ মাসে প্রায় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী ও লাখ লাখ টাকার মাদক উদ্ধার করে। ট্রানজিট রুট হিসেবে ভৈরব থানা পুলিশ ভৈরবে গত দু’বছরে প্রায় শতাধিক মাদকের গাড়ি জব্দ করেছে। ভৈরবে কমপক্ষে ২০০ মাদক বিক্রির স্পট রয়েছে। স্থল, নৌ ও রেলপথে প্রতিদিন বানের মতো মাদক পাচার হয় ভৈরব দিয়ে। কিন্তু ভৈরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস জনবলের অভাবে কাজ করতে পারছে না বলে জানায় কর্মকর্তারা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply