রোজিনা ইসলামের জামিন শুনানিতে কী কী কথা হলো?

|

অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে করা মামলায় রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভার্চুয়ালি রোজিনার জামিন শুনানি হয়। আদালত আগামী রোববার আদেশের দিন ধার্য করেন।

আজ বৃহস্পতিবার রোজিনার জামিন আবেদনের শুনানির দিন উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন এবং রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী।

রোজিনা ইসলামের জামিন প্রসঙ্গে তার পক্ষে এহসানুল হক সমাজী রোজিনা ইসলামের মামলাটিকে জামিনযোগ্য উল্লেখ করে আদালতে বলেন, দণ্ডবিধির ৪৯৬ ধারা অনুযায়ী, জামিন পাওয়াটা তার প্রতি কোনো দয়া, অনুগ্রহ, অনুকম্পা নয়। বরং জামিন পাওয়াটা হচ্ছে তার মৌলিক অধিকার।

আদালতের কাছে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ধারা ১২ উপস্থাপন করেছেন জানিয়ে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই আইনের সেকশন ১২-তে বলা আছে, যদি সেকশন ৩ ছাড়া অন্য কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলেও সে ক্ষেত্রে বলা আছে তা আমলযোগ্য এবং জামিনযোগ্য।’

তাছাড়া জব্দতালিকার বর্ণনা অনুযায়ী, জব্দকৃত জিনিস রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে সরাসরি নেওয়া হয়নি বরং একজন সরকারি কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করেছেন। সুতরাং সেগুলো আদৌ রোজিনা ইসলামের দেহ তল্লাশি করে পাওয়া কি না, কিংবা তিনি কোনো ‘চুরি’ করেছেন কিনা এবং এরপর উদ্ধার হয়েছে কিনা, তা একটি আইনগত প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়, বলেছেন রোজিনার আইনজীবী।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ধারায় গুপ্তচরবৃত্তির কথা বলা থাকলেও রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির কোনো অভিযোগ এজাহারের বর্ণনায় নেই।

রোজিনা ইসলামের দোষ স্বীকার করার ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে রোজিনার আইনজীবী বলেন, ‘আমি আদালতকে বলেছি, এ মুহূর্তে কোনো ইমপোর্টেড তথ্যের ওপরে জামিন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করার কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞ আদালত শুধু বিবেচনা করবেন এজাহার, জব্দতালিকা ও পুলিশি প্রতিবেদন। আমি আরও বলেছি, কথিত মতে যে স্বীকারোক্তি, এভিডেন্স অ্যাক্টের সেকশন ২৪ এবং ২৫-এর বিধান অনুযায়ী, এমনকি কোনো পুলিশ অফিসারের কাছে কোনো স্বীকারোক্তি আইনত গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং এগুলো তর্কিত, সৃজীত এবং জামিন বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটা দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ।’

উল্লেখ্য, রোজিনা ইসলাম গত সোমবার মন্ত্রণালয়ে গেলে সেখানকার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাকে আটকে রাখার অভিযোগ আসে। প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রাখার পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় তাকে। এরপর মাঝরাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী তার বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে একটি মামলা দায়ের করেন।

মঙ্গলবার (১৮ মে) রোজিনাকে আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করে। অন্যদিকে রোজিনার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। ওই দিন শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে দিন ধার্য করেন এবং রোজিনাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply