মাদরাসা শিক্ষার্থীদের নামিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিলেন মামুনুল: পুলিশ

|

সোমবার আদালতে নেয়া হয় হেফাজত নেতা মামুনুল হককে।

হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার ২৩ মামলার তদন্তভার পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। এসব মামলায় শীর্ষ নেতাদের যাদেরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। মঙ্গলবার সকালে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান সিআইডি প্রধান। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক। বলেছেন, কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ক্ষমতার কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

সম্প্রতি, সড়ক অবরোধ থেকে ভাঙচুর নানা উগ্রতা দেখা গেছে হেফাজতের কর্মসূচিকে ঘিরে। অগ্নিসংযোগ থেকে বাদ যায়নি রেলওয়ে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ভূমি অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা স্থাপনা।

মার্চের ২৬ থেকে প্রায় সপ্তাহব্যাপী দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে এই তাণ্ডবলীলা। রাজধানীসহ ওইসব এলাকায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এর সঙ্গে, ২০১৬ সালের ৫টিসহ মোট ২ মামলার তদন্তভার নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।

মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে এসব মামলার তদন্ত নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন সংস্থার প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ব্যক্তি মুখ্য নয়, তদন্তে যার নামই আসুক, আইনের আওতায় আনা হবে।  বলেন, আমরা এসব মামলা প্রাথমিক তদন্তে তিন ধরনের লোকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। যারা উপস্থিত থাকছে, অনুপস্থিত থাকলেও ইন্ধন দিয়েছে, আর যারা সরাসরি হামলা ও নাশকতায় জড়িয়েছে। মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।

সম্প্রতি, গ্রেফতার হওয়া হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিষয়েও কথা বলেন সিআইডি প্রধান। জানান, নারায়ণগঞ্জে নাশকতার মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হবে তাকে। সিআইডি প্রধান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে তার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। তিনি একটি মামলায় রিমান্ডে আছেন। প্রাথমিকভাবে নারায়ণগঞ্জের দুটি মামলায় তার (মামুনুল হক) ইনভলভমেন্ট পাওয়া গেছে। আমরা সব মামলা স্টাডি করছি। যদি অন্য কোনো মামলাতেও তার ইনভলভমেন্ট থাকে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে মামুনুল হকের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তিনি নিজের বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের জন্য ভুল স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেছেন ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও) হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে মাদরাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চেষ্টা করেছিলেন মামুনুল।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। হারুন জানান, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক তাবলীগের সাদপন্থিদের মারধরের কথা স্বীকার করেছেন।

মামুনুলের বিরুদ্ধে বাকি অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply