মায়ের কোলে নেয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি

|

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জে সদর হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের নবজাতক চুরির ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার জেলার সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল শাখাওয়াত এইস. মেমোরিয়াল হাসাপাতাল থেকে আবারও ৬ ঘণ্টার একটি নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে হাসপাতাল থেকে নবজাতকটি চুরি হয়। নবজাতকটি জেলার তাড়াশ থানার নওগাঁ গ্রামের মাজেদ-সবিতা দম্পতির। দীর্ঘ ১২ বছর পরে এটাই তাদের প্রথম সন্তান। কিন্তু বাবা-মা বুকে তুলে নেবার আগেই হারিয়ে গেলো বুকের ধন।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, নবজাতকের নানী নবজাতককে কোলে রাখাকালীন সময়ে বোরকা পরিহিত একজন নারী তার কাছ থেকে কোলে নেয় নবজাতককে। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে নবজাতকসহ পালিয়ে যান তিনি।

হাসপাতালের ম্যানেজার জাকির হোসেন জানান, শনিবার সকাল ৮টায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে ১১টার দিকে অপারেশনের মাধ্যমে এই শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পর প্রসূতি বেশ কিছুক্ষণ অচেতন থাকায় শিশুটিকে নানী জয়নব কোলে নেন।

শিশুটির কান্নাকাটি শুনে বোরখা পরিহিত এক মহিলা এসে জয়নবের সাথে কথা বলে ভাব জমায় এবং শিশুটিকে প্রায় ২/৩ ঘণ্টাব্যাপী কোলে রাখেন। একপর্যায়ে নানী জয়নব হাসপাতালে নিচে ঔষধের জন্য গেলে এই সুযোগে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শিশুটিসহ বোরখা পরিহিত ওই মহিলা পালিয়ে যায়। তবে এবিষয়ে তাদের কোনো অবহেলা নেই বলেও জানান তিনি।

চুরি হওয়া শিশুর বাবা আব্দুল মাজেদ জানান, ১২ বছর অপেক্ষার পর প্রথম সন্তান আসবে ঘরে। তাই সহধর্মীনির নিরাপদ প্রসব আর সন্তানের নিরাপত্তার কথা ভেবে শনিবার সকাল ৮টার দিকে হাটিকুমরুল সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্ত্রী সবিতাকে ভর্তি করি। সন্তান প্রসবের সংবাদটিও যথা সময়ে পাই। কিন্তু নিজের সন্তানকে আর বুকে নেয়া হলো না আমার। নবজাতক জন্মের ৬ ঘণ্টার মধ্যেই চুরি হয়ে গেলো আমার প্রথম সন্তান। এই কষ্ট আর কাউকে বোঝাতে পারছি না। আমি আমার সন্তানকে ফেরত চাই যে কোন কিছুর বিনিময়ে।

এ বিষয়ে নবজাতকের নানী জয়নব বেগম জানান, একজন মহিলা বললো তার ভাইয়ের ছেলে হয়েছে এই হাসপাতালেই। কিন্তু তাকে কোলে নিতে দিচ্ছেন না। তাই শিশুটিকে কোলে নিতে চাইলে আমি দেই। কিন্তু বিকেলে হাসপাতালের নিচে ঔষধরে জন্য গেলে মহিলাটি আমার নাতীকে নিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে তিনি চেনেন না বলেও জানান।

সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বিষয়টি সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে অবহিত করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনার স্থলে আছি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply