ঝিনাইদহে গমের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা

|

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে রবি শস্যের মধ্যে গম একটি লাভজনক ফসল। বিগত সময়ে গমের আবাদ কমলেও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকরা আবারও গমের আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। অন্য ফসলে লোকসান হওয়ায় কৃষকরা বর্তমানে এই লাভজনক আবাদের পরিমাণ বৃদ্ধি করছেন। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা এবং ভালো লাভের আশা করছেন গমচাষীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এব্যাপারে জানায়, এই জেলার মাটি গম আবাদের জন্য উপযোগী। কিন্তু ২০১৬ সালের দিকে গম ফসলে আস্টের আক্রমন দেখা যায়। সে সময় পূর্বের কোন প্রস্তুতি ছাড়াই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় অনেক জায়গায় গম মাঠেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। যেন পরবর্তিতে ব্যাপক ভাবে আস্টে ছড়াতে না পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঝিনাইদহসহ পাশের কয়েকটি জেলার গম আবাদে নিরুৎসায়িত করে কৃষি বিভাগ। একই সাখে চলে নতুন জাতের সন্ধান। নতুন জাতের গম বীজ পাবার পর আবারও বাড়তে থাকে গমের আবাদ। বর্তমানে জেলাতে গমের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

চলতি মৌসুমে জেলায় ৬’হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৫’হাজার ৪২২ হেক্টর জমিতে। আর এপরিমান জমি থেকে ২৪’হাজার ৫৭২ মেট্টিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্যধরা হয়েছে। গত মৌসুমে জেলাতে ৩’হাজার ৪’শ হেক্টর লক্ষমাত্রা ধরা হলেও দ্বিগুনের বেশি অর্থৎ ৬’হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ করে চাষিরা। যেখানে ২৯’হাজার ৫৭০ মেট্টিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্যধরা হয়েছিল। যা জেলার চাহিদা পুরণ করে অন্য জেলাতে রফতানি সম্ভব হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, অধিকাংশ জমিতে এখনো গমের শীষ কাঁচা রয়েছে। তবে আগামী ১৫/১৬ দিন পর গম পাঁকা শুরু করবে বলে জানান কৃষকরা। রোগবালাইয়ের তেমন আক্রমণ না থাকলেও কোন কোন কৃষক ছত্রাকের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করছে। চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। লাভজনক এই গম চাষে কৃষকদের আবারও আগ্রহী করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের গমবীজ, সার, বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরন বিনামূল্যে বিতরন করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে জেলার কৃষি অফিস।

সদর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের গম চাষি আব্দুল্লা বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে গম আবাদ করতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হয়। আর উৎপাদিত গম বিক্রি করে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। তাছাড়া বর্তমানে গম বিক্রির কোন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়না। অল্প খরচে ভাল লাভ হওয়ায় কৃষকরা আবার গম আবাদে ঝুকছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply