দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাইবার হামলার শিকার যুক্তরাষ্ট্র

|

নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাইবার হামলার শিকার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা। যার মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তদারক করা প্রতিষ্ঠানও আছে।

এরইমধ্যে ৩ মন্ত্রণালয় স্বীকার করেছে, আক্রান্ত হওয়ার কথা। এ ঘটনায় সন্দেহ করা হচ্ছে রাশিয়াকে। এতো বড় হামলার পরও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীরবতা নিয়ে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস সদস্যরা।

কয়েকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের সাইবার হামলার খবর দিচ্ছিলো মার্কিন গণমাধ্যম। কিন্তু প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়নি কিছুই। তবে বৃহস্পতিবার, রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে ভয়াবহ হ্যাকিংয়ের তথ্য তুলে ধরে টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট। তারা জানায়, ৪০টির বেশি সরকারি সংস্থা, এনজিও ও আইটি কোম্পানি হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে।

এরইমধ্যে মার্কিন অর্থ, বাণিজ্য ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় আক্রান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে সিনেটে কথা তোলেন আইনপ্রণেতারা। তারা অভিযোগ করেন, রাশিয়ার সম্পৃক্ততা স্পষ্ট হলেও পুরো চুপ আছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সিনেটর ডিক ডারবিন বলেন, এটা খুবই ভয়াবহ বিষয়। প্রতিদিনই নতুন নতুন এজেন্সি আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশিত হচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হলো-তারও খতিয়ান নেই। অথচ হোয়াইট হাউস কার্যত নিশ্চুপ। রুশদের এতো বড় ষড়যন্ত্রের পরও যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডার ইন চিফ চুপ করে আছেন। এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আক্রমণ হিসেবে ঘোষণা দেয়া উচিত ছিলো।

চাপের মুখে, প্রতিনিধি পরিষদের সাইবার নিরাপত্তা উপ-কমিটিকে ব্রিফিং করেছে প্রশাসন। তবে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য মোটেই খুশি নন আইনপ্রণেতারা। লুকোচুরির অভিযোগও করেছেন তারা।

স্টিভেন লিঞ্চ, সভাপতি, প্রতিনিধি পরিষদের নিরাপত্তা বিষয়ক সাব-কমিটি-রয়টার্স এতো বড় পরিসরে হ্যাকিং হয়েছে যে, আমাদের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এখনো পুরো বিষয়টির কূলকিনারা করতে পারেননি। অন্তত ১৮ হাজার সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত কম্পিউটার হ্যাকড হয়েছে। হ্যাকিংয়ে ব্যবহৃত সফটওয়ারটি এখনো অপসারণের কাজ চলছে।

প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য ডেবি শুলজ বলেন, এখানে প্রশাসনের তরফ থেকে যে ব্রিফিং দেয়া হলো, তা খুবই হতাশাজনক। বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই, যেনো সামান্যতম তথ্য দিয়ে আমাদের বিদায় করা হয়েছে। কংগ্রেসকে জরুরি ভিত্তিতে এ তথ্য দেয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন হামলা ঠেকানো যায়।

মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, সাইবার হামলায় আক্রান্তদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু অস্ত্র দেখভাল করা প্রতিষ্ঠানও আছে।

প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য জেমি রাসকিন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন নীরবতা অবাক করে। অবস্থা এমন যে, সব দরজা বন্ধ রেখে তিনি জানালা খুলে দিয়েছেন। জাতীয় নিরাপত্তায় ক্ষতির মাধ্যমে যার খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে।

হ্যাকারদের অনুপ্রবেশের তথ্য জানিয়ে, সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি। এ হামলাকে নামকরণ করা হয়েছে ‘সানবার্স্ট’ হিসেবে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply