রবীন্দ্রনাথের লেখা জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি বিজেপি এমপির; মোদিকে চিঠি, পেলেন উত্তরও

|

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভারতের জাতীয় সংগীতের পরিবর্তন করতে চান ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির এমপি সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। এজন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। সেই চিঠির উত্তর পেয়ে উচ্ছ্বসিত এই এমপি। খুশি ধরে রাখতে না পেরেই কিনা নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে পোস্টও দিয়েছেন। ফলাফল, এ নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। সূত্র: আনন্দবাজার।

সুব্রহ্মণ্যমের দাবি, শুধু তার নয়, দেশের যুবসমাজের একটি বড় অংশের মনের কথা বলছেন তিনি। তার আপত্তির একটি শব্দ হলো জাতীয় সংগীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটির ব্যবহার।

বিজেপির এই প্রবীণ নেতার মতে, বর্তমান জাতীয় সংগীতের কিছু কিছু শব্দ (সিন্ধু) অনাবশ্যক ধন্দ তৈরি করে। বিশেষ করে স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে। রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’-র শব্দ বদলে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (আইএনএ) গাওয়া ‘জন গণ মন’র আদলে লেখা অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় সংগীত ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পঙক্তি ‘শুভ সুখ চ্যান’ গানটি ব্যবহারের পক্ষে কথা বলছেন তিনি। ১৯৪৩-এ সুভাষ বসুর নির্দেশে আইএনএর দুই সদস্য মুমতাজ হোসেন এবং কর্নেল আবিদ হাসান সাফরানি গানটি রচনা করেন। সুর দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিংহ ঠাকুর। সুরের প্রভেদ খুব একটা অবশ্য ছিল না। রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’-র প্রথম পঙক্তিটি জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়। এতে ৫২ সেকেন্ড সময় লাগে। এদিকে আইএনএর ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পঙক্তিটি গাইতে সময় লাগে ৫৫ সেকেন্ড।

জাতীয় সংগীতের শব্দবদল প্রসঙ্গে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের একটি বক্তব্য উল্লেখ করেছেন স্বামী। তা হলো, ১৯৪৯ সালে রাজেন্দ্র প্রসাদ বলেছিলেন– জাতীয় সংগীতের শব্দ পরিবর্তন বা সংশোধন করা যেতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে মোদি ও তার নেতাকর্মীরা গেল দুই বছরে নানাভাবে রবীন্দ্রনাথের নাম টেনে আনছেন। রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন লেখা নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিভিন্ন মহলে আপত্তির কথা শোনা গেছে। মোদি ক্ষমতায় আসার পর সঙ্ঘের শিক্ষা সেলের নেতা দীননাথ বাত্রা এনসিইআরটির পাঠ্যক্রম থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাদ দেয়ার সুপারিশও করেছেন। অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে গত দুই বছরে রবীন্দ্রনাথের নানা কবিতা আবৃত্তি করেছেন স্বয়ং মোদিও। ফলে এত সহজে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দেয়া সম্ভব না সেটি সম্ভবত তিনি ভালোই বুঝতে পেরেছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply