শিবচরে গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার, নারীসহ গ্রেফতার ২

|

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর:

পূর্ব শত্রুতার জেরে মাদারীপুর জেলার শিবচরে এক সন্তানের জননী গৃহবধূকে গণধর্ষণের
অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় শনিবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে শিবচর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী। রাতেই পুলিশ ধর্ষণে জড়িত ও সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত ওই নারীসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে উপজেলার পাঁচ্চর সোনার বাংলা প্লাজার সামনে থেকে জোরপূর্বক ওই গৃহবধূকে একটি ইজিবাইকে উঠিয়ে পাঁচ্চর বাখরেরকান্দি প্রজেক্টের মধ্যে একটি একতলা বাড়িতে নিয়ে যায় আখি আক্তার, সুমন মোল্লাসহ পাঁচ ব্যক্তি। সেখানে হাত-পা ও মুখ বেঁধে রেখে বিকেল পর্যন্ত দুই দফায় তাকে ধর্ষণ করে একাধিক ব্যক্তি।

পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মুখ বেঁধে ইজিবাইকে করে পুনরায় ধর্ষণের জন্য অন্যত্র নেয়ার সময় কৌশলে মুখ খুলে চিৎকার দিলে স্থানীয়রা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে ইজিবাইকটির পথরোধ করে। এ সময় ইজিবাইকে থাকা আসামিরা দ্রুত পালিয়ে গেলে গৃহবধূকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। রাতে শিবচর থানায় ভুক্তভোগী বাদি হয়ে ধর্ষণে সহযোগিতাকারী এক নারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসীর স্ত্রী আখি আক্তার (২৫) নামের উপজেলার
রাজারচর মোল্লাকান্দি এলাকার ওই মহিলা ও ভুক্তভোগী নারী পূর্ব পরিচিত। আখির বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসার অভিযোগ পুরানো। আখি শিবচর পৌর এলাকায় বসবাস করার সময় ৩ মাস আগে ভুক্তভোগী ওই নারীকে দেহ ব্যবসার প্রস্তাব দেয়। এ ঘটনা জানতে পেরে ভুক্তভোগী নারীর পরিবারের সদস্যরা আখিকে মারধর করে। এরপর আখি স্থান ত্যাগ করে বাখরেরকান্দি প্রজেক্টের মধ্যে বাসা ভাড়া নেয়। সেখানে সে সুবল মণ্ডল ওরফে সুমন মোল্লার সাথে একসাথে থাকতো।

গতকাল শনিবার বাচ্চার জন্য দুধ কেনার টাকা ধার আনতে ভুক্তভোগী ওই নারী পাঁচ্চর সোনারবাংলা প্লাজার কাছে তার ফুপাত ভাইয়ের নিকট আসেন। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শনিবার দুপুরে সোনার বাংলা প্লাজার নিকট হতে ওই মহিলা ও তার সহযোগীরা জোর করে
তাকে একটি ইজিবাইকে উঠিয়ে বাখরেরকান্দি প্রজেক্টের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে আটকে রাখে। সেখানে নিয়ে প্রথমে তাকে মারধর করে তারা। এরপর সোহেল, এসকান ও সুবল মণ্ডল নামের তিন ব্যক্তি তাকে একাধিকার ধর্ষণ করে।

রাতে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ বাদি হয়ে শিবচর থানায় আঁখি আক্তার (২৫), সুবল মণ্ডল ওরফে সুমন মোল্লা (৩২), সোহেল (৩৫), এসকান (৩৭) ও অটোরিকশা চালক সোহাগ হাওলাদারের (৩৫) নামে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

শিবচর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন সেরনিয়াবাত বলেন, মেডিকেল রিপোর্টের জন্য ভুক্তভোগীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, মামলা দায়েরের পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিকভাবে গণধর্ষণের সত্যতা পাওয়া গেছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আঁখি মূলত দেহ ব্যবসায়ী। পূর্ব শত্রুতার জেরে আঁখিই এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply