ফ্রান্সে এক কৃষ্ণাঙ্গের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড়

|

ফ্রান্সে এবার এক কৃষ্ণাঙ্গের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় চলছে তোলপাড়। পুলিশের বর্ণবাদী আচরণের প্রতিবাদে নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সর্বত্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যমেও চলছে সমালোচনা। ফরাসিরা বলছে, সম্প্রতি পুলিশ সুরক্ষায় পাস হওয়া বিল উসকে দেবে বর্ণবাদী আচরণ।

প্যারিসে নিজ স্টুডিওতেই পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন সঙ্গীত পরিচালক মাইকেল জেকলার। কোনো কারণ ছাড়াই, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাকে বেদম পিটিয়ে আহত করেন তিন পুলিশ কর্মকর্তা। স্টুডিওর ভেতরেই ছোড়া হয় টিআর সেল। এক পর্যায়ে মাইকেলকে আটক করে নেয়া হয় হাজতে।

গেল সপ্তাহের এ ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ বৃহস্পতিবার প্রকাশ করে নিউজসাইট লুপসাইডার। যা দ্রুত ভাইরাল হলে সব ফরাসি গণমাধ্যমে শিরোনাম হয় । মাইকেলের দাবি বর্ণবাদী আগ্রাসনের শিকার তিনি। ভিডিও ফুটেজ দেখে আদালত দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা তার আইনজীবীর।

পুলিশি নির্যাতনের শিকার মাইকেল জেকলার বলেন, ভিডিও না হলে তারা আমাকে মেরেই ফেলতো। আমার ৯ সহকর্মীর ওপরও আঘাত করেছে। তারা ভিডিও করছিল বলে পুলিশ আরও ক্ষেপে যায়। ভিডিওতেই সে প্রমাণ আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে তিনজন।

মাইকেলের আইনজীবী হাফিদা আলি বলেন, ১২ মিনিটের নির্যাতনের ফুটেজ আছে। এই ভিডিওগুলি খুবই জরুরি। কারণ, সহিংসতার অভিযোগ তুলে মাইকেলকে আটক করা হয়েছিল। ভিডিও প্রমাণ না থাকলে হয়তো মারাত্মক দায় নিয়ে তাকে জেলেই থাকতে হতো।

এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফরাসিরা। সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। পুলিশের বর্ণবাদী আচরণের নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন, ফরাসি ফুটবল তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আতোয়ান গ্রিজম্যান।

অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তের পর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আরও কঠোর শাস্তির।

ফরাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেন, দেশের নিরাপত্তা বিভাগের ইউনিফর্মকে কলঙ্কিত করেছে তারা। আদালতে প্রমাণ হওয়া মাত্রই তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে। পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পাশাপাশি মানবিকও হতে হবে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ হলে, পুলিশের পোশাক পরার অধিকার তাদের থাকবে না।

এর আগে গেলো সোমবার প্রকাশ পাওয়া ভিডিও ফুটেজে একটি অভিবাসী ক্যাম্পে পুলিশি বর্বরতার প্রমাণ মেলে।

এমন এক সময় পুলিশি নির্যাতনের দু’টি ঘটনা সামনে এলো, যখন পুলিশের সুরক্ষায় আইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ইমানুয়েল ম্যাকরন সরকার। গেল মঙ্গলবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাস হওয়া বিল অনুযায়ী ফ্রান্সে নিষিদ্ধ হবে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার ছবি প্রকাশ। যদিও বিলের প্রতিবাদ করে ফরাসীরা বলছে পুলিশের নির্মমমতা আড়ালের সুযোগ করে দিবে নতুন আইন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply