মুশফিকের ঢাকাকে নিয়ে ছেলেখেলা করলো চট্টগ্রাম

|

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি লিগের প্রথম দিনের দুটি ম্যাচই ছিল শ্বাসরুদ্ধকর। দি্বতীয় দিনে এসে যেন তার ছিটেফোঁটাও নেই। বিশেষ করে বৃহস্পতিবারের শেষ ম্যাচটি তো হলো একদমই একতরফা। মুশফিকুর রহিমের ঢাকাকে নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে উঠলো চট্টগ্রাম। প্রথমে বল হাতে ঢাকার ব্যাটিংকে গুঁড়িয়ে দিলো শরীফুল, মোস্তাফিজ, মোসাদ্দেকরা। পরে ঢাকার বোলারদের একরাশ হতাশায় ভাসিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই ম্যাচের উত্তেজনা শেষ করে দেন চট্টগ্রামের সৌম্য-লিটন। ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ হারলো ঢাকা।

বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তোপ দাগান অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম কাণ্ডারি শরিফুল ইসলাম। ওভারের চতুর্থ বলে ২ রানে ফিরিয়ে দেন ঢাকার ওপেনার ও বয়সভিত্তিক দলের সতীর্থ তানজিদ হাসান তামিমকে। শরিফুলের ইনসুইং ডেলিভারিটি দেখেশুনেই খেলার চেষ্টা করেছিলেন তামিম কিন্তু তা আর হলো কই? বলটি এজ হয়ে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে আবারও শরীফুলের আঘাত। এবার শূন্য রানে ফেরালেন সাব্বির রহমানকে। হাফভলি বল পেয়ে বাউন্ডারি হাকানোর নেশা পেয়ে বসে সাব্বিরকে। কিন্তু শর্ট কাভারেই শামসুর রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে পাততাড়ি গুটালেন।

পঞ্চম ওভারের একেবারে প্রথম বলেই স্পিনার নাহিদুলকে রিভার্সে খেলতে গিয়ে শূন্য হাতে ফেরেন ঢাকার সেনাপতি মুশফিকুর রহিম। অষ্টম আকবর আলীকে ১৫ রানে ক্লিন বোল্ড করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। আসা-যাওয়ার মিছিলে মনোযোগ হারিয়েই কিনা সেই ওভারেই মোসাদ্দেকের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ওপনে নেমে ব্যাটিং ঝড় তোলা নাঈম শেখ। ২৩ বলে ৩ চার ও ৩ ছয়ে ৪০ রান করেছিলেন তিনি।

এরপর আবু হায়দার, শাহাদাত হোসেন, মুক্তার আলীরা আর কিছু করতে পারেননি। নাঈম শেখের বিদায়ের পর মাত্র ২২ রানেই শেষ ৫ উইকেট হারায় ঢাকা। চট্টগ্রামের ৬ বোলারের সবাই দেখা পান উইকেটের। এদের মধ্যে শরীফুল, মোস্তাফিজ, মোসাদ্দেক, তাইজুল নেন দুটি করে উইকেট। সৌম্য সরকার আর নাহিদুল ইসলামও ফেরেননি খালি হাতে। এক তাইজুল ছাড়া বাকি সবারই ইকোনমি রেট দেখলে মনে হতে পারে এ বুঝি কোনো টেস্ট ম্যাচ। কে বলে টি-টোয়েন্টি বোলারদের খেলা নয়?

কিন্তু, একই অঙ্গেও থাকে ভিন্ন রূপ। স্বল্প রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামের দুই ওপেনার সৌম্য-লিটন দেখালেন টি-টোয়েন্টিতে কীভাবে ব্যাট করতে হয়। স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৯ ওভারে ৭৯ রান তুলে ফেলেন এই দু’জন। জয়ের থেকে মাত্র ১০ রান দূরে থাকতে লিটন ৩৩ বলে ৩৪ রান করে নাসুম আহমদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গেলেও জয় তুলে নিয়েই মাঠ ছাড়েন সৌম্য। ২৯ বলে ৪ চার ও দুই ছয়ে ৪৪ রান করেন তিনি। তার উইনিং পার্টনার মুমিনুল ৩ বলে ২ বাউন্ডারি হাকিয়ে করেন ৮ রান।

কাগজে কলমে খুলনা ও ঢাকাকে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের শক্তিমত্তা সম্পন্ন দুই দুল। একইদিনে একতরফা ম্যাচ হারার তিক্ত স্বাদ পেল দল দুটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বেক্সিমকো ঢাকা: ৮৮ (১৬.২ ওভার)
তানজিদ ২, নাঈম শেখ ৪০, সাব্বির ০, মুশফিক ০, আকবর ১৫, শাহাদাৎ ২, আবু হায়দার ০, মুক্তার ১২, নাসুম ৮, রুবেল ০, রানা ০*; নাহিদুল ১/১৩, শরীফুল ২/১০, মোস্তাফিজ ২/১৩, মোসাদ্দেক ২/৯, তাইজুল ২/৩২, সৌম্য ১/২)

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ৯০/১ (১০.৫ ওভার)
লিটন ৩৪, সৌম্য ৪৪*, মুশফিক ৮*; রুবেল ০/২৩, রানা ০/৩০, আবু হায়দার ০/১৫, মুক্তার ০/১০, নাসুম ১/৫, শাহাদাৎ ০/৭)।
ফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে জয়ী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply