ভারতীয় ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখেই ভাইকে সপরিবারে খুনের কৌশল ঠিক করে রাহানুর

|

ভারতীয় টিভি চ্যানেল সনি৮’র ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে নিখুত ভাবে সাতক্ষীরার আলোচিত ভাই-ভাবীকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের ছক আঁকে রায়হানুর।

আজ মঙ্গলবার সিআইডি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ এমন তথ্য দেয় পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে (বৃহস্পতিবার) সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শাহিনুর ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুনসহ তাদের দুই শিশুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তার ছোট ভাই রায়হানুরকে আটক করলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।

পুলিশ জানায়, রাহানুর তার ভাইয়ের পাশেই একটা আধা পাকা বিল্ডিং এ থাকতো। আর পাশের বিল্ডিংএ থাকতো রাহানুরের ভাই। তখন পুলিশের সন্দেহ হয় যে পাশের ঘরে থেকেও সে কিছু টের পেলো না কেন? তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার ঘটনা উদঘাটন করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, সে দীর্ঘদিন মালয়শিয়ায় ছিল। তারপর সে দেশে এসে কয়েকদিন ড্রাইভারের চাকরি করে। তারপর সে ফাহিমা নামে এক নারীকে বিয়ে করে। কিন্তু সে শারিরীকভাবে অক্ষম হওয়ায় তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়, সেইসাথে সে বেকারও হয়ে পরে। এ নিয়ে তার ভাই ও ভাবী তাকে নানাভাবে অপমান করতো।

তারপরই সে সিদ্ধান্ত নেয় তার ভাবীকে হত্যা করবে। তারপর সে সন্ধ্যা বেলায় এনার্জি ড্রিংসের সাথে ঘুমের ওষুধ ‍মিশিয়ে তার ভাবী ও ভাতিজা ভাতিজিকে খাওয়ায়। সেদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার ভাই বাড়ি ফিরে তাকে টিভি দেখা অবস্থায় পায় এবং তার বেকারত্বের কারণ দেখিয়ে টিভির বৈদ্যুতিক বিল কে দিবে এমন প্রশ্ন করে। তারপর সে তার ভাইকে বলে আমিই বিদ্যুত বিল দিব বলে তাকেও ঘুমের ওষুদ মিশ্রিত ড্রিংক্স খেতে দেয়।

পুলিশ জানায়, তারপর রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে একটা টাওয়াল পেচিয়ে কার্ণিশ বেয়ে ছাদে উঠে তার ভাইয়ের রুমে যেয়ে দেখতে পায় ভাই অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে আছে। এমন অবস্থায় সে তার ভাইকে কোপ দিয়ে গলা কেটে ফেলে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হাতের রগ কেটে দেয়। তারপর সে পাশের রুমে যেয়ে তার ভাবী ও ভাতিজা-ভাতিজিকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেয়ে প্রথমে ভাবীকে কোপ দেয়। কোপ দেয়ার পর ভাবী জেগে উঠে চিৎকার করলে তাকে উপর্যুপরি কোপ দিয়ে হত্যা করে। এসময় ভাতিজা-ভাতিজিরা জেগে উঠলে তাকে চিনে ফেলায় সে তাদেরও খুন করে। এরপর সে পাশের পুকুরে যেয়ে গোসল করে এবং চাপাতিটা পুকুরে ফেলে দেয়।

এসময় সে তার ভাইয়ের সবচেয়ে ছোট বাচ্চাকে হত্যা না করে বরং তাকে নিয়ে পালিয়ে যেয়ে এবং তার স্ত্রী ফাহিমার সাথে নতুন করে সংসার করারও চিন্তা করে বলে জানায় পুলিশ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply