কুড়িগ্রামে বৃষ্টিতে আমনের ব্যাপক ক্ষতির শংকা

|

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপের প্রভাব সারা দেশের ন্যায় কুড়িগ্রামেও পড়েছে। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি আর মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে জেলার উপর দিয়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে টানা বর্ষণ আর দমকা হাওয়ায় চলতি মৌসুমের আমন ধান ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া বন্যা থেকে বেঁচে যাওয়া আমন ধানের সবে মাত্র শীষ ফুটতে শুরু করেছে। এই সময় বৃষ্টি আর বাতাসে শীষ ঝড়ে পড়ছে। অনেক জায়গায় ধান বাতাসে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এসব চারায় ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা কম। শাক সবজির উপরেও প্রভাব পড়েছে বলে জানান কৃষক।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার। এতে, সদর, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, রাজারহাট, উলিপুর, সদর এবং ফুলবাড়ি উপজেলার বেশিরভাগ উঁচু এলাকার ক্ষেতের ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও জমিতে জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হয়েছে।

ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের কৃষকরা জানান, আর কয়েকদিন পরেই ধান ঘরে তুলতে পারতেন তারা। কিন্তু বাতাসে তাদের দেড় থেকে দুই বিঘা করে আমন খেত বাতাসে হেলে পড়েছে। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় তারা বড় দুশ্চিন্তায় আছেন।

ফুলবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ২৩০ হেক্টর আমন ধান মাটিতে হেলে পড়েছে।

নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের কৃষক শহিদ মিয়া জানান, তার আমন ক্ষেতে কেবল মাত্র ফুল এসেছে। এরমধ্যে বাতাস আর বৃষ্টি হওয়ায় ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়ায় আমনের ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা হয়নি। উপজেলায় মাঠ পর্যায় কাজ চলছে। দু/একদিনের মধ্যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে।

জেলা কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দি মিঞা জানান, মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের হেলে পড়া ধান গাছগুলো ছোট ছোট করে আঁটি বেঁধে তুলে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ধান গাছ গুলো তুলে দিলে কিছুটা ক্ষতি সামলিয়ে উঠতে পারবেন কৃষক।

এ মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার আমন চাষ হয়েছে প্রায় ১লাখ ১৯ হাজার হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply