ধর্ষণ নিয়ে সেই ভিডিওটি সরিয়ে নিলেন অনন্ত জলিল

|

অনন্ত জলিল।

ধর্ষণের জন্য নারীদের খোলামেলা পোশাককে দায়ী করে ভিডিও পোস্ট করার পর সেটি সরিয়ে নিয়েছেন অভিনেতা অনন্ত জলিল। তার এই ভিডিওটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুুমুল আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে জলিল আধুনিক নারীদের পোশাকের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, এ ধরনের পোশাকের কারণে মানুষ আপনার মুখের পরিবর্তে আপনার শরীর দেখে। তারা অশ্লীল মন্তব্য করে এবং ধর্ষণের কথা চিন্তা করে।

নারীদের ধর্ষণ ও সহিংসতার ক্রমবর্ধমান ঘটনার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যেই এমন মন্তব্য করে বসলেন তিনি। শনিবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ভিডিওটি পোস্ট করেন অনন্ত জলিল। ৬ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নারীদেরকে ‘ভাই হিসেবে’ কিছু পরামর্শ দিতে শোনা যায় এই অভিনেতাকে। ভিডিওটি তার স্ত্রী বর্ষার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়েছিল। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বর্ষার পেইজ থেকে সেটি এখনও সরানো হয়নি।

ভিডিওতে অনন্ত জলিল বলেন, আমার কথাগুলো আজ তিতা মনে হতে পারে। খুব তিতা। কারণ এর আগে আমি কখনোই এ ধরনের কথা বলি নাই। কিন্তু এগুলো সবই সত্যি কথা। কেন এ ধরনের ড্রেস পরতে হবে? এগুলো কি মডার্ন ড্রেস, নাকি অশালীন ড্রেস? মডার্ন হলো শুধু তোমাদের চেহারাটা দেখা যাবে যা আল্লাহ তোমাকে দিয়েছেন। আর বাকি শরীর সব ঢেকে রাখতে হবে।’

অনন্ত জলিল বলেন, নারীরা (বাংলাদেশে) অশালীন পোশাক পরেন অন্য দেশের নারী, সিনেমা, টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে। এ ধরনের পোশাকের কারণে মানুষ আপনার মুখের পরিবর্তে আপনার শরীর দেখে। তারা (নারীদের সম্পর্কে) অশ্লীল মন্তব্য করে এবং ধর্ষণের কথা চিন্তা করে।

অনন্ত জলিল আরও বলেন, আপনারা কী (নারীরা) নিজেকে আধুনিক বলে গণ্য করেন? আপনি যে পোশাকটি পরছেন তা কী আধুনিক নাকি অশ্লীল? একটি আধুনিক পোশাক বলতে কেবল আপনার মুখ দেখানো এবং শালীন পোশাক দিয়ে আপনার শরীর আবৃত থাকা বুঝায় যেটিতে আপনাকে সুন্দর দেখায়।

তিনি আরও বলেন, মুখ ব্যতীত পুরো শরীর আবৃত হয় না এমন যেকোনো পোশাকেই নারীদের ‘অত্যন্ত খারাপ’ দেখায়।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই অভিনেতা আরও বলেন, ছেলেদের মতো টি-শার্ট পরে আপনি রাস্তায় নামবেন এবং যখন সেখানে অসম্মানিত বা ধর্ষিত হয়ে ঘরে ফিরে আসবেন তখন হয় আপনি আত্মহত্যা করতে পারেন অথবা প্রকাশ্যে আপনি মুখ দেখাতে পারবেন না। ‘শালীন’ পোশাক ধর্ষণ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা নিবৃত করবে উল্লেখ করে অনন্ত বলেন, আপনি যদি শালীন পোশাক পরেন তাহলে মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখবে।

তবে ভিডিও’র শুরুতে ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন অনন্ত জলিল। ধর্ষণ করার আগে পুরুষদের দুবার ভাবার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি আপনার স্ত্রী, বোনের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে তাহলে আপনি কী করবেন?

ভিডিওতে অনন্ত জলিল প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক, আপনি শক্তহাতে এই অমানুষদের জন্য মৃত্যুদণ্ড আইন করে তা বাস্তবায়ন করুন।

 ‘

‘ছেলেদের মতো একটা টি-শার্ট পরে রাস্তায় বের হয়ে যাও। খুব মডার্ন তুমি। নিজেকে অনেক মডার্ন মনে করো। তারপর ইজ্জত হারিয়ে বাসায় যাও। হয় আত্মহত্যা করো, নয়তো কাউকে আর মুখ দেখাতে পারো না। শালীন ড্রেস পরলে যারা বখাটে, যারা ধর্ষণের চিন্তা-ভাবনা করে তারাও তোমার দিকে তাকাবে না। সম্মান করবে। মাটির দিকে তাকিয়ে চলে যাবে’, বলেন তিনি।

ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের আইন চালু করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন অনন্ত জলিল।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply