নারী চিকিৎসকের অভিযোগে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদাবনতি, দু’জনকেই বদলি

|

ভৈরব প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের একজন নারী চিকিৎসক (সহকারী সার্জন) অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পর স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে পদাবনতি (ডিমোশন) করে বদলি করা হয়েছে। বদলি করা হয়েছে ওই নারী চিকিৎসককেও।

কয়েক মাস যাবত অশালীন আচরণ, মানসিক যন্ত্রণা ও কাজে বাধা সৃষ্টিসহ বিভিন্নভাবে ডা. বুলবুল আহমেদ তাকে নির্যাতন করছেন বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারী চিকিৎসক। এছাড়াও ডা. বুলবুল আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

অভিযোগ পাওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমাম স্বাক্ষরিত এক পত্রে বুধবার ডা. বুলবুল আহমেদকে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আরএমও পদে বদলি করা হয়। পত্র পাওয়ার পর তিন কার্যদিবসের মধ্য তাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। অন্যথায় ৪ দিনের দিন থেকে সরাসরি অবমুক্ত হয়েছেন বলে গণ্য হবে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওই নারী চিকিৎসক অভিযোগ দেয়ার পর তাকেও মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে বদলি করা হয়। জেলার সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে সাময়িক বদলি করার কথা বলা হয়। তবে বদলিকৃত ওই নারী ডাক্তারের মূল কর্মস্থল ভৈরব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বেতন-ভাতাদি প্রাপ্য হবেন বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, ডা. বুলবুল আহমেদ ২০১৯ সালের ২৩ মে ভৈরবে কর্মস্থলে যোগদান করেন এবং একই বছরের ১২ ডিসেম্বর অভিযোগকারী ওই নারী ডাক্তার একই হাসপাতালের কর্মস্থলে কাজে যোগ দেন। ডা. বুলবুল আহমেদকে তার পদ থেকে ডিমোশন করে তাকে বদলি করা হয়। এ ঘটনায় ভৈরব স্বাস্থ্য বিভাগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী ওই নারী ডাক্তারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছুই অবগত নই। আমি কোনো নারী চিকিৎসকের সঙ্গে অশালীন, অশোভনীয় আচরণ করেছি- এমনটা আমার জানা নেই। বদলির ব্যাপারে আমি এখনও কোনো অফিসিয়াল পত্র পাইনি।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান জানান, ওই নারী চিকিৎসক ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদফতরে অভিযোগ করেছেন; যার অনুলিপি আমাকে দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি সত্য কিন্তু অভিযোগের সব কথা বলতে পারব না। কারণ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিষয়। অফিসিয়াল সব কথা মিডিয়ার কাছে বলা সম্ভব নয়।

অভিযোগকারী নারী ডাক্তারকে তার নিরাপত্তাজনিত কারণে বদলি করেছেন কিনা- জানতে চাইলে ডা. মো. মুজিবুর রহমান বলেন, কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট তাই তাকে প্রেষণে (সাময়িক বদলি) আনা হয়েছে। তবে তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় ছিলো বলে তিনি জানান।

ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমাম জানান, নারী চিকিৎসকের অভিযোগটি আমি পেয়েছি। তবে স্বাস্থ্য সচিব পর্যন্ত বিষয়টি অবগত হয়েছে। সচিবের নির্দেশে ডা. বুলবুল আহমেদকে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলির আদেশ দিয়েছি।

অভিযোগের মূল বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তাধীন বিষয়ে এখন কিছুই বলতে পারবো না। তবে তদন্ত শেষ করার পর সবই জানতে পারবেন বলে তিনি জানান।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply