যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দু’দিন আগেই করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হতে পারে

|

কোভিড নাইনটিনের ভ্যাকসিন আবিষ্কার বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে ভোটে। যে কারণে ৩ নভেম্বর নির্বাচনের আগেই ভ্যাকসিন অনুমোদনে চাপ বাড়ছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ওপর। তবে রোগ প্রতিরোধে কোনো টিকা শতভাগ কার্যকর বলে প্রমাণ মেলার আগেই এর উৎপাদন-বণ্টনের প্রস্তুতি ছিল অপ্রত্যাশিত।

এই চাপের সূত্র ধরেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দু’দিন আগেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে। টিকাদান কর্মসূচি শুরুর লক্ষ্যে, ১ নভেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রস্তুতে ৫০ অঙ্গরাজ্যে চিঠি পাঠিয়েছে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা-সিডিসি।

ভোটারদের সমর্থন টানতে গিয়ে তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ঠেলে দেয়ার প্রশ্নে, খোদ স্বাস্থ্যবিদদের তোপের মুখে ট্রাম্প প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ড. জেনিফার ডিলেহে বলেন, “মানবদেহে নিরাপত্তা নিশ্চিতের আগে বাণিজ্যিক উৎপাদন ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু মার্কিন সরকার এর পেছনে পানির মতো টাকা ঢালছে। তাড়াহুড়োর মধ্য টিকাদান শুরুর প্রস্তুতিতে ভুল এড়াতে সতর্ক থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”

বর্তমানে বিভিন্ন দেশে পরীক্ষার তৃতীয় ও শেষ ধাপে রয়েছে, করোনাভাইরাসের কমপক্ষে ৯টি ভ্যাকসিন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দুই বায়োটেক প্রতিষ্ঠান- মডার্না ও ফাইজারের সম্ভাব্য প্রতিষেধক কিনতে কয়েকশ’ কোটি ডলারের চুক্তি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

ফাইজার’র প্রধান নির্বাহী ড. অ্যালবার্ট বুরলা বলেন, “২৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ফাইজারের পরীক্ষামূলক টিকা গ্রহণে নাম লিখিয়েছেন। এ সংখ্যা ৩০ হাজার পর্যন্ত উঠবে বলে আশা করছি। আশা করছি, অক্টোবরের মধ্যে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পারবো।”

সাধারণত তিন ধাপের পরীক্ষায় শতভাগ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পর চূড়ান্ত অনুমোদন মিললে শুরু হয় ভ্যাকসিন উৎপাদন। কোভিড নাইনটিনের ক্ষেত্রে, পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকা অবস্থাতেই শুরু হয়েছে কয়েকটি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের শত-কোটি ডোজ উৎপাদন। ভ্যাকসিন গবেষণার ইতিহাসে যা নজিরবিহীন।

পুলিৎজারজয়ী বিজ্ঞান বিষয়ক সাংবাদিক ও লেখক লরি গ্যারেট বলেন, “সিডিসি’র এই চিঠি দেখে আমি হতবাক। কোনো রোগের প্রতিষেধক অনুমোদনের আগেই তা প্রয়োগের প্রস্তুতি নেয়ার ঘটনা অন্তত যুক্তরাষ্ট্রে কোনোদিন ঘটেনি। সব গভর্নরদের টিকাদানে প্রস্তুত হতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কোনো টিকা তৈরিই করিনি!”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসছে ৫৯ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসের কার্যকর ভ্যাকসিন খুঁজে পাওয়াই অসম্ভব, টিকাদান শুরু করা দূরের কথা। কিন্তু সিডিসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী, ১ নভেম্বর টিকাদান কর্মসূচি শুরুর লক্ষ্যে আগেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে পৌঁছে যাবে ভ্যাকসিন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply