পাহাড়ের সবার কাছে তিনি এখন ‘বিস্ময় বালক’

|

শোয়েব রহমান:

বান্দরবান সদর উপজেলার দুর্গম রাজবিলা ইউনিয়নের ‘বিস্ময় বালক’ বাবু মারমা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে যার অপূর্ব শারীরিক কসরত রীতিমতো অবিশ্বাস্য। এমন শারীরিক কসরত বিস্মিত করে সবাইকে। সম্প্রতি তার শারীরিক কসরতের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসে বাবু।

বান্দরবান সদর থেকে ১৭ কি.মি. দূরে বাঘমারা গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্ম নেন বাবু। বর্তমানে তিনি বাঘমারা জুনিয়র হাই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ছেন। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বাবু মেঝ।

ছোটবেলায় ইংরেজি সিনেমা দেখতে দেখতে শারীরিক কসরতের প্রতি ঝোঁক বাড়ে বাবুর। আস্তে আস্তে নিজের শরীরকে ফ্লেক্সিবল (নমনীয়) করতে থাকেন। সুযোগ পেলেই তিনি বিভিন্ন কসরতের চেষ্টা করতেন।

প্রথম দিকে এ নিয়ে গ্রামের মানুষ হাসি-তামাশা করত। কিন্তু তা আমলে না নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তিনি। কয়েক বছর আগে আন্না নামে কানাডিয়ান জিমন্যাস্টের ভিডিও ইউটিউবে ভাইরাল হয়। যা নজর কাড়ে বাবু মারমার। এরপর আন্নার ভিডিও অনুসরণ করে অনেকগুলো কসরত আয়ত্ব করে ফেলেন তিনি। কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই শুধুমাত্র ভিডিও দেখে এমন শারীরিক কসরত আয়ত্ব করা বাবু এখন সবার আলোচনায়।

অবশ্য শুরু থেকেই পরিবারের সহযোগিতা পেয়েছেন বাবু; বিশেষ করে বড় বোন বিউটি মারমার। যিনি ছবি তুলে ও ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়তই সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। যা তাকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।

এই কিশোরের লক্ষ্য আরও বড় কিছু করার। স্বপ্ন দেখেন বিশ্বসেরা জিমন্যাস্ট হওয়ার। কিন্তু যথাযথ প্রশিক্ষণ ও পৃষ্টপোষকতা না পাওয়ায় তার স্বপ্ন কতটা সফল হবে তা এখন অনিশ্চিত।

বাবু মারমার পিতা চাহ্লা প্রূ মারমার বিশ্বাস, একটু প্রশিক্ষণ ও পৃষ্টপোষকতা পেলে তার ছেলে দেশসেরা জিমন্যাস্ট হতে পারবে। এতে দেশের নামও উজ্জ্বল হবে। তাই তিনি সরকারের পাশাপাশি সবার সহযোগিতা চান।

বিষয়টি জানার পর প্রশিক্ষণসহ সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বান্দরবান জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ইসলাম বেবী। বলেন, বাবু আমাদের গর্ব। তাকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব। জেলা ও উপজেলার সকল উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে আমরা তার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি সকল ধরণের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন পৌর মেয়র।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply