আহত হয়েও গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগীরা

|

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার দক্ষিণ বড়কাচনা গ্রামের একটি পরিবারের সাত সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, ৩১ জুলাই নাগেরপাড়া ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিরন আকন ও তাদের আত্মীয় স্বজন এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। হামলা শিকার পরিবারটি ওই দিনই থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। উল্টো ওই সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার পক্ষেই মামলা নেয়া হয়!

এরশাদ আলী হরকরারা এলাকায় বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত; তাই পুলিশ মামলা নেয়নি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। এরশাদ আলী বলেন, মিরন ও তার মামা রবিন আমাদের অনেক চাপ দেয়। তারা আমাদের ঘর-বাড়ি ভাংচুর করেছে, আমার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীসহ সাতজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে। থানায় মামলা করতে গেলে ‘আমরা বিএনপি করি তাই মামলা নেয়া যাবে না’- এমন কথা বলে থানা থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

অপর দিকে ওই সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার এক আত্মীয়ের করা মামলায় ওই পরিবারের ১৩ সদস্য পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

গোসাইরহাট থানা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় দ্রুতগতিতে মটরসাইকেল চালানোকে কেন্দ্র করে মিরন আকন ও তাদের স্বজনদের সাথে এরশাদ আলী হরকরাদের বিরোধ বাঁধে। এর সূত্র ধরে গত ৩১ জুলাই মিরন ও তার স্বজনরা হরকরা পরিবারের উপর হামলা চালায়। এতে এরশাদ আলী হরকরা, তার স্ত্রী নিপা আক্তার, চাচাতো ভাই এনায়েত হরকরা, রবিউল ইসলাম, ইমদাদ হরকরা, মোজাম্মেল হরকরা, মোদাচ্ছের হরকরা আহত হয়। এদের মধ্যে মাথায় কোপের আঘাত লাগায় এরশাদ আলী হরকরা ও তার চাচাতো ভাই এনায়েত হরকরাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ঘটনায় মিরন আকনের স্বজন মিঠু আকন ও মহসিন আকন আহত হয়েছেন।

পরে এরশাদ আলী হরকরার পক্ষে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে থানায় তাদের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা হয়নি। তাদের অভিযোগ দেয়ার খবর পেয়ে মিরনের স্বজন তরিকুল ইসলাম ১৪ ব্যক্তিকে আসামি করে গোসাইরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, ওই দুই ব্যক্তির মাথায় আঘাত রয়েছে। তাদের পুরোপুরি সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে।

নাগেরপাড়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিরন আকন বলেন, তারা আগে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করত। তাদের জিম্মি করে চাঁদা নিত। সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে তারাই আমাদের উপর চড়াও হয়েছে। তবে, তারা কীভাবে আহত হয়েছে তা আমরা জানি না।

জানতে চাইলে গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্যা শোয়েব আলী বলেন, এরশাদ হরকরাদের অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। কেন নেয়া হয়নি জানতে চাইলে, ‘মামলাটি নিতে পারিনি, এর বেশি কিছু বলতে পারব না’ বলে জানান তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply