বাংলাদেশে গ্রেফতার সেই ভারতীয় তরুণীর শাস্তি চাইছেন মা!

|

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে ঢাকায় গ্রেফতারকৃত ভারতীয় তরুণী প্রজ্ঞা ওরফে আয়েশা জান্নাত মোহনার শাস্তি দাবি করেছেন তার মা। খবর এনডিটিভির।

গত শুক্রবার রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। আয়েশা ভারতীয় নারী জঙ্গি ও নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির অন্যতম সদস্য। তাকে গ্রেফতারের পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

ভারতীয় গণমাধ্যমে আয়েশার গ্রেফতারের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করা হলে তার পরিবারও বিষয়টি জানতে পারে। খবরে মেয়ের নামের আগে ‘জঙ্গি’ শব্দটা জুড়ে যেতে দেখে প্রজ্ঞার মা গীতা মেয়ের শাস্তি দাবি করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি চাই আইন অনুযায়ী ওকে শাস্তি দেয়া হোক।’

খবরে বলা হয়েছে, আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুল তাসনিম (২৫) ধর্মান্তরিত মুসলিম। আগে তার নাম ছিল প্রজ্ঞা দেবনাথ। পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার ছোট্ট শহর ধনিয়াখালিতে তার বাড়ি। চার বছর আগে যখন প্রজ্ঞা বাড়ি থেকে চলে যায়, তখন তিনি ধনিয়াখালি কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

প্রজ্ঞার মা জানান, ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মেয়ে প্রতিদিনের মতো কলেজের উদ্দেশে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আমরা খুঁজে পাইনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে শেষমেশ পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করি। এ ঘটনার দুদিন পর প্রজ্ঞা তাকে ফোন দেন বলে জানান গীতা।

তিনি বলেন, ওই সময় প্রজ্ঞা আমাকে ফোন করে জানায়, সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে এবং বাংলাদেশে আছে। তবে বাংলাদেশ পুলিশ বলছে, ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় প্রজ্ঞা অনলাইনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়। এরপর ধর্মান্তরিত হয়ে অনলাইনে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে। সেখান থেকে নব্য জেএমবির সদস্যরা তাকে দলে ভেড়ান।

এরপর ওমান প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক আমির হোসেন সাদ্দামকে মুঠোফোনে বিয়ের পর বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আয়েশা গত বছরের অক্টোবরে চলে আসেন। তবে এর আগেও ভারতীয় এই তরুণী একাধিকবার বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন এবং জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতাও করেছেন আয়েশা। কিন্তু নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানী গ্রেফতার হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তবে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি উত্তর কমলাপুর এলাকা থেকে আসমানী খাতুন ওরফে আসমা ওরফে আমাতুল্লাহ সিটিটিসির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২৮ বছরের এই নারীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। ওই মামলায় রিমান্ড শেষে তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন। ওই মামলাতেই ভারতীয় এই তরুণীকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

ইউএইস/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply