‘ফাইভ’ পাস মাছ ব্যবসায়ীর নিজের ক্লিনিক, নিজেই করেন সিজার অপারেশন!

|

বরিশাল ব্যুরো
প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়েছে অনেক কষ্টে। ভর্তি হওয়া হয়নি মাধ্যমিকে। মাছের ব্যবসা আছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌর শহরে। রয়েছে নিজ মালিকানাধীন একটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ পর্যন্ত সব কিছুই ঠিক ছিল। তবে পিলে চমকানোর বিষয় হলো চিকিৎসক পরিচয়ে ওই ক্লিনিকে নিজেই প্রসূতি মায়েদের সিজার করতেন মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল (৩৬)।

গোপন খবরের ভিত্তিতে ৯ জুলাই বৃহস্পতিবার মোস্তাফা কামালের মালিকানাধীন ‘মহিমা ক্লিনিক এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার’ এ যৌথ অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও র‌্যাব-৮।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী জানান, প্রাইভেট ওই ক্লিনিকের মালিক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন। এমনকি তিনি নিজে প্রসূতি মায়ের সিজার অপারেশন করতেন। এছাড়া ভুয়া চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত হত ক্লিনিকটি। ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারটি নামে মাত্র। বসবাসের জায়গা হিসেবে ব্যবহার হতো অপারেশন থিয়েটার। অভিযান চালিয়ে সেখানে বিপুল পরিমান মেয়াদোত্তীর্ন ওষুধও পাওয়া গেছে।

চিকিৎসক সেজে মানুষের সাথে প্রতারণার অপরাধে মোস্তাফা কামালকে ৩ মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের ব্যাপারে প্রশাসনকে তথ্য দেয় অপর ভুয়া চিকিৎসক আমির হোসেন ভূইয়া। কামালের আগে তাকে আটক করে র‌্যাব। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মহিমা ক্লিনিক এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার সেন্টার ও সৌদি প্রবাসী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে দুটি প্রাইভেট হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাব।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঠবাড়িয়া উপজেলার সাফা বন্দরে হাজী আব্দুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে আটক করা হয় ভুয়া চিকিৎসক আমিন হোসেন ভূইয়াকে (২২)। ভুয়া সনদপত্র দেখিয়ে ওই হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে চাকরি নিয়েছিল নোয়াখালী জেলার শাহাজাদপুর উপজেলার আবুল খায়ের মিয়ার ছেলে আমির হোসেন। এএইচ ভূইয়া (সুজন) নাম ধারন করে সে গাইনোকোলজিস্ট হিসেবে রোগী দেখার পাশাপাশি সিজার সহ বিভিন্ন অপারেশন করে আসছিল। পাশাপাশি মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে ‘অন কল’ চিকিৎসক হিসেবে অপারেশন করতো।

অপরাধ স্বীকার করে নেয়ায় আমির হোসেনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও হাজী আব্দুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন করানোর অপরাধে সৌদি প্রবাসী হাসাপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply