শ্বাসকষ্টে মারা গেলেও আতঙ্কে লাশ গ্রহণ করলো না স্বজনরা

|

রাঙামাটি প্রতিনিধি:

ডায়াবেটিস, রক্তচাপ এবং সেইসাথে শ্বাসকষ্ট নিয়ে চট্টগ্রামে মারা গেলেন রতন দত্ত নামে এক ব্যক্তি। তবে স্বজনদের কেউ করোনা আতঙ্কে লাশ গ্রহণ করতে যায়নি। সোমবার ভোরে লাশ দাহ করে স্বেচ্ছাসেবীরা।

রাঙামাটি শহরের ব্যস্ততম রিজার্ভবাজার এলাকার জমজম হোটেলের সামনে চানাচুর, পেয়াজু ও চা বিক্রি করতেন রতন দত্ত। ৫ ভাই এরমধ্যে একজন মারা গেছেন আরও আগে। রতনের পরিবারে ২টি মেয়েসহ রতনের স্ত্রীও হৃদরোগে আক্রান্ত।

রতন দত্তের আগ থেকেই ডায়াবেটিস প্রেসার এবং শ্বাসকষ্ট ছিলো। শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় গেলো ১৩ জুন দুপুরে তাকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১০টার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় জেলা প্রশাসনের ইর্মাজেন্সী রেসপন্স টিম তাকে চট্টগ্রাম পাঠায়। টিমের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়ে রাত ২টার পর রাঙামাটিতে ফিরে আসে।

পরেরদিন ১৪ জুন বেলা ৩টার সময় রতন দত্ত মারা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নানাভাবে স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে লাশ বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করেন কিন্ত তার ভাই বা পরিবারের কোন সদস্য হাসপাতালে যায়নি। পরে বাধ্য হয় লাশটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা দাহ করে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ওয়ার্ড মাষ্টার কামরুজ্জামান জানান, রোগী মারা যাওয়ার পর আমরা নানাভাবে রোগীর স্বজনদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি। পরে করোনা ইউনিটের রেড জোনের চিকিৎসক ডা: সাজ্জাদ হোসেনসহ আমরা পুলিশকে লাশ বুঝিয়ে দিতে চাইলে পুলিশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে লাশ বুঝিয়ে দিতে বলে। আমরা নমুনা সংগ্রহ করে লাশ হস্তান্তর করি।

চট্টগ্রাম কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসান মাহমুদ জানান, আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের সাথে যোগাযোগ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বালোয়ার দীঘিরপাড় এলাকায় ভোর সাড়ে ৪টায় তাকে দাহ করি।

নিহতের বড় ভাই রাহুল দত্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার ঠাণ্ডা লাগছে শুনেছি। তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। করোনার ভয়ে কেউ লাশ আনতে যায়নি বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে নিহতের পরিবারের মোবাইল নম্বর চাইলে তার কাছে নেই বলে ফোন কেটে দেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply