অ্যান্টিজেন কিটের পরীক্ষা সাময়িক স্থগিতের আবেদন গণস্বাস্থ্যের!

|

অ্যান্টিজেন কিটের পরীক্ষা সাময়িক স্থগিতের আবেদন গণস্বাস্থ্যের!

নমুনায় ত্রুটি থাকায় অ্যান্টিজেন কিটের পরীক্ষা সাময়িক স্থগিতের আবেদন জানিয়েছে গণস্বাস্থ্য।

গণস্বাস্থ্যের করোনাভাইরাস শনাক্তের র‍্যাপিড টেস্ট কিট নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। নানা সময়ে ট্রায়াল নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ তুললেও এবার নিজেদের উদ্ভাবিত জিআর কোভিড-১৯ র‍্যাপিড ডট ব্লট অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এর পরিবর্তে অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা ও মতামতের কাজ আগে শেষ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে রিপোর্ট দিতে সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

মঙ্গলবার (২ জুন) বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াকে এক লিখিত আবেদনে এ অনুরোধ জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড ডট ব্লোট প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর এবং গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার।

যমুনা নিউজের হাতে আসা গণস্বাস্থ্যের সেই আবেদনের কপিতে দেখা গেছে, অ্যান্টিজেন পরীক্ষার নমুনা হিসেবে সংগৃহীত লালার মাধ্যমে যথাযথ ফলাফল না আসায় গণস্বাস্থ্যের এই আবেদন। এজন্য লালা সংগ্রহের সঠিক প্রক্রিয়া অনুসন্ধানের জন্য সময় চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আবেদনপত্রে গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ লিখেছে, “অ্যান্টিজেন কিটের অভ্যন্তরীণ কার্যকারিতা পরীক্ষায় নমুনা হিসেবে লালা সংগ্রহের কোনো ইনভ্যাসিভ প্রসিডিউর প্রয়োজন হয় না। লালা ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়ায় আমাদের আবেদনে আপনারা নমুনা হিসেবে লালা পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছেন।

সম্প্রতি জিআর কোভিড ১৯ র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের নমুনা যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহে অসামঞ্জস্যতা পাওয়ায় সঠিক ফলাফল নির্ণয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন শনাক্তকরণের জন্য যথাযথ উপকরণ লালার নমুনায় থাকছে না বা অন্য বস্তুর মিশ্রণ লক্ষণীয়। সম্মিলিত মনিটরিং টিম এই সমস্যাটি চিহ্নিত করেছে। গণস্বাস্থ্য আরএনএ বায়োটেক টিম এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের আরএন্ডডি ল্যাবে সুনির্দিষ্টভাবে সর্বোপরি ব্যবহার যোগ্য লালা সংগ্রহ পদ্ধতি প্রয়োগের কাজ শুরু করেছে।”

শিগগিরই এর ফলাফল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানাতে পারবে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, এতে কয়েকদিন সময় লাগবে। এ অবস্থায় লালা সংগ্রহের সঠিক পদ্ধতি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটটির পরীক্ষা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে গণস্বাস্থ্য। প্রয়োজনে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির ৫০০ করে দেয়া কিটের দুইটি লট ফেরত এনে নতুন লট পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এরমধ্যে, দেশের ক্রান্তিকাল বিবেচনায় অতি দ্রুত অ্যান্টিবডি কিটের ট্রায়াল শেষ করে তার ফলাফল ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে পাঠানোর অনুরোধ জানায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রথমে করোনাভাইরাস শনাক্তে অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট উদ্ভাবনের দাবি জানায়। অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা করে তারা একই সাথে অ্যান্টিজেনের মাধ্যমেও করোনা শনাক্তের র‍্যাপিড টেস্ট কিট উদ্ভাবন করেছে। দুই পদ্ধতিতে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হবে উল্লেখ করে তারা নির্ভুল ফলাফলের দাবি জানায়। কিট দুটির ট্রায়ালের পদ্ধতি নিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সাথে গণস্বাস্থ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত তাদের পছন্দের প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মাধ্যমে কার্যকারিতা পরীক্ষা অনুমতি পায় গণস্বাস্থ্য। এখন সেই প্রতিষ্ঠানকেই অ্যান্টিজেন টেস্ট কিটের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে এটির ট্রায়াল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার আবেদন জানালো গণস্বাস্থ্য।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply