করোনাভাইরাসের আরও নমুনার জিনোম তথ্য প্রয়োজন বাংলাদেশের

|

করোনাভাইরাসের আরও জিনোম তথ্য প্রয়োজন বাংলাদেশের

দেশে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের উপস্থিতির সম্ভাবনা; প্রয়োজন আরও নমুনার জিনোম তথ্য।

তোয়াহা ফারুক:

দেশে প্রথমবারের মতো করোনার জিনোম সিকোয়েন্স উদঘাটন হওয়ায় উচ্ছসিত সবাই। এই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. সমীর কুমার সাহা ও তার কন্যা অণুজীব বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের যে নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে একই ধরনের ভাইরাস সৌদি আরব ও রাশিয়ায়ও দেখা গেছে। তবে, প্রকৃত চিত্র পেতে আরও অনেক নমুনার সিকোয়েন্স করা দরকার বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসেছে বাংলাদেশে। করোনাভাইরাসও বিভিন্ন পথ ঘুরে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। প্রকৃত চিত্র পেতে আরও অনেক নমুনার সিকোয়েন্স করা দরকার বলে জানালেন গবেষকরা।

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অণুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, আমরা প্রথমবারের মতো দেশেই একটি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করতে পেরেছি। আরও অনেক নমুনার পরীক্ষা করলে আমরা আরও পরিষ্কার ধারণা পাবো। বুঝতে পারবো ভাইরাসটি কোন কোন পথে বাংলাদেশে এসেছে, এর পরিবর্তন হয়েছে কিনা, কোন ধরনের ভ্যাকসিন ভাইরাসটির কোন ধরনটির ওপর কাজ করবে কিংবা করবে না।

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. সমীর কুমার সাহা যমুনা নিউজকে বলেন, আমরা এক সপ্তাহের মধ্যে আরও ১২ থেকে ১৫টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, এক মাসের মধ্যে আরও ৫০টি নমুনার জিনোম তথ্য পাওয়া যাবে। তখন ভাইরাসটির গতি প্রকৃতি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরইমধ্যে শুরু করেছে করোনা পরীক্ষা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ কী করোনা পরীক্ষা করা? জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের বিষয়ে কী ভাবছে তারা?

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বরাবরই এগিয়ে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সে জায়গা থেকে আমরা করোনার শনাক্তের কাজটি করছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল এটি নয়। গবেষণা, উদ্ভাবনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সহায়তা চাইছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস রেসপন্স কমিটির আহ্বায়ক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান বলেন, আমরা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মানসিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এজন্য, কিছু রি-এজেন্ট, রাসায়নিক উপাদান প্রয়োজন, সেগুলো এখন কতটা সহজে আনা যাবে সেটি বলা মুশকিল। এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা লাগবে। এছাড়া এই গবেষণায় কিছু ফান্ডিংয়ের প্রয়োজন হয়। সেসবও আশা করি পাওয়া যাবে। তবে, পেছনের কাজ অনেকটুকু এগিয়ে রেখেছি আমরা।

করোনার বিভিন্ন নমুনার জিনোম তথ্য পেতে সমন্বিতভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব যমুনা নিউজে বলেন, যারা যারা এই কাজটির চেষ্টা করছেন তাদের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয়টা জরুরি। একই কাজ যেন একাধিকজন না করেন। কেউ খুলনার নমুনা পরীক্ষা করছেন তো অন্য কেউ ঢাকা, চট্টগ্রাম বা নায়ায়ণগঞ্জের নমুনা পরীক্ষা করলেন। তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর আমরা একসাথে অনেকগুলো নমুনার জিনোম তথ্য পাবো। এটা ভাইরাসটি সম্পর্কে পূণাঙ্গ তথ্য পেতে সহযোগিতা করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো, সচেতনতামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি গবেষণায়ও জোর দিতে হবে। তাহলেই করোনার বিরুদ্ধে সমন্বিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ।

আরও দেখুন: করোনা: রাশিয়া-সৌদি আরবের সাথে মিল পাওয়া গেছে বাংলাদেশের ভাইরাসের
ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে:

https://www.facebook.com/JamunaTelevision/videos/705275050238891/?v=705275050238891


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply