বিশ্বে বদলে গেছে দাফন-কাফন

|

করোনাভাইরাসে মৃত্যুর কারণে বদলে গেছে মৃতদেহ দাফনের নিয়ম। জেরুজালেম ও গাজায় কাফনের কাপড়ের বদলে এখন প্লাস্টিকে মুড়ে কবর দেয়া হচ্ছে মুসলিম ও ইহুদিদের। লাশ সৎকারের নিয়মেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। করোনায় মৃত্যুসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ব্রিটেনের মুসলিমদের দাফনে পরিবর্তন এসেছে। খবর রয়টার্সের।

সরকারের নির্দেশ, লাশ ধোয়া যাবে না। কাপড়ের বদলে বিশেষ ধরনের প্লাস্টিকে মুড়ে কবর দিতে হবে। কবর দেয়ার সময় সর্বোচ্চ ২০ জন থাকতে পারবেন। সবাইকে মৃতের প্রতি শ্রদ্ধা এবং মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে হবে ওয়েবসাইটে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মৃত্যু এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং তথা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবনযাপন করতে বলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোলাকুলি, হাত মেলানো, চুম্বন ইত্যাদিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইহুদিদের লাশ সাধারণত কফিন বাদে কাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে দাফন করা হয়। কিন্তু এখন কাফনের কাপড়ে না মুড়ে নিশ্ছিদ্র প্লাস্টিকে প্যাকেট করে দাফন করা হচ্ছে। এতদিন দাফন শেষ হওয়ার পর থেকে সাতদিন পর্যন্ত ‘শেভা’ পালন করত ইহুদিরা। ওই সাতদিন আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব খাবার-দাবার নিয়ে বাড়িতে গিয়ে মৃত ব্যক্তির পরিবারকে সমবেদনা জানাত। এসবও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইসরাইলের ইহুদি দাফন তদারককারী প্রতিষ্ঠান শেভ্রা কাদিশার এক কর্মী ইয়াকুব কুর্তজ বলেন, ‘এভাবে দাফন-কাফনের কারণে অনেকের মধ্যে একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। আমরা ঠিক জানি না এমন পরিস্থিতিতে এর চেয়ে বেশি কি আশা করা যায়। প্রতিদিন অনেকগুলো দাফনানুষ্ঠানে যোগ দিতে হয় আমাদের।’

জেরুজালেম ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের গ্রান্ড মুফতি শেখ মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, করোনায় মৃত মুসলিমদের লাশ কীভাবে দাফন করতে হবে সে ব্যাপারেও দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। হোসেইন বলেন, ‘এখন মুসলিমদের লাশ আর ধোয়া হচ্ছে না। কাফনেও মোড়ানো হচ্ছে না। প্লাস্টিকে ভরে কবরে রাখা হচ্ছে।’ ইসরাইল ও ফিলিস্তিনে এখন সবার জন্যই দাফনের রীতিনীতিও বদলে গেছে। অনুষ্ঠানে ২০ জনের বেশি উপস্থিত থাকতে পারছে না। ফলে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিমতীরে সামাজিক মাধ্যমে মৃতের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে স্বজনেরা।

সম্প্রতি গাজায় ক্যান্সারে মারা যান এক ফিলিস্তিনি। মৃতের ভাই ইহাব নাসের আলদীন জানান, চাইলেও তার লাশ জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে নিয়ে জানাজা হয়নি। হাসপাতাল থেকে সরাসরি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। বৃহত্তর স্বার্থে সবাই নতুন নিয়ম মেনে নিয়েছে জানিয়ে ইহাব বলেন, ‘আমরা লাশ দাফন করেছি এবং সবাইকে বলেছি কবরস্থান কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে শোক জানাতে। হাত মেলানো, কোলাকুলি করা এবং চুমু খাওয়া এখানকার রীতি হলেও সবাইকে এসব না করতে বলে দিয়েছি।’ জেরুজালেম এবং ফিলিস্তিনের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ মুহাম্মদ হুসেইন বলেন, ‘প্রয়োজনের তাগিদে এই নিয়ম। প্রয়োজন হলে বিধিনিষেধ আরোপ করা যায়।’


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply